এছাড়া রাজধানীর মিরপুরের ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিগত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ক্লাস বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে কলেজটিতে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হলেও তাকে কলেজে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এরপর সোমবার (০১ অক্টোবর) থেকে কলেজের মূল ফটকে ও ভবনের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি আগের অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মঙ্গলবারও (০২ অক্টোবর) একইভাবে চলছে তাদের বিক্ষোভ।
জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা ডেন্টাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ (চ. দ.) ডা. আবুল কালাম বেপারীকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য অধিদফতরে নেওয়া হয়। এর নয়দিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর ডেন্টাল কলেজে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবিরকে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে তাকে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট ও কলেজ শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, অধ্যাপক হুমায়ুন কবির ২৬ তারিখ সকালে ডেন্টাল কলেজে যোগদান করতে গেলে তাকে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এমনকি অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়ে রাখা হয়। আর অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে গুটিকয়েক চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীকে জোর করে বসিয়ে রাখা হয়, যাতে সেদিকে কেউ যেতে না পারে।
এ অবস্থায় অধ্যাপক হুমায়ুন কবির নিজ কার্যালয়ে না বসেই কলেজের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নোটিস দেন। এর নির্দেশনা অনুসারে কলেজে ক্লাস শুরু করেন কয়েকজন শিক্ষক। কিন্তু ক্লাস থেকে ওই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বের করে দেন বিক্ষুব্ধরা। এদিকে, মঙ্গলবার সকালে কলেজ প্রশাসন নির্দেশ দেয় পেছনের গেটের তালা ভাঙতে। পরে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর নেতৃত্বে তালা ভাঙা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন- মিরপুর জোনের এডিসি জাকির হোসেন, এসি জামিল, ভাষাণটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির এবং কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিক উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কলেজের ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছি। তারা বিষয়টি মানতে চাইছে না। আগের অধ্যক্ষকেই চাইছেন শিক্ষার্থীরা। কোনো সময়ও দিতে রাজি হচ্ছে না। তারপরও আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি।
কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বরের সরকারি আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ সেপ্টেম্বর আমি এখানে যোগদান করতে আসি। কিন্তু তখনই বিড়ম্বনায় পড়ি। আমাকে অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি কলেজেও ঢুকতে পারছি না। কয়েকদিন ধরে হাসপাতাল পরিচালকের কক্ষে বসে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
‘তারা সরকারি আদেশ উপেক্ষা করে কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছে। তারা কেনো এটা করছে তা আমি জানি না। বিষয়টি ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে। ’
এবিষয়ে উপস্থিত পুলিশের বক্তব্য, কলেজের পেছনের গেট দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সাচ্চু প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। উনারা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমরা আছি পিরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কাজে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৮
এমএএম/টিএ