ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ইন্দুরকানী কলেজে উপবৃত্তির নামে লাখ টাকা হাতানোর অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৯
ইন্দুরকানী কলেজে উপবৃত্তির নামে লাখ টাকা হাতানোর অভিযোগ ইন্দুরকানী সরকারি কলেজ। ছবি: বাংলানিউজ

পিরোজপুর: পিরোজপুরের ইন্দুরকানী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান সিকদারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়ার নামে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এ অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেননি বলে জোর করে লিখিত রাখছেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ জন্য তিনি প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অন্তত দেড় হাজার টাকা করে আদায় করেছেন। 

শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের ডিগ্রি শাখার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৬২০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান সিকদার। তিনি প্রতিষ্ঠানের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী শৈলেন্দ্রনাথ ও মো. আবুল বাশারের মাধ্যমে এই টাকা আদায় করেছেন।

উপবৃত্তির ফরম পূরণ ও মোবাইলে অ্যাউন্ট খুলতে টাকা নেওয়ার বিধান না থাকলেও অধ্যক্ষ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই দীর্ঘদিন ধরে টাকা আদায় করছেন। এভাবে একাদশ শ্রেণি থেকে শুরু করে, ডিগ্রি ও অনার্স শাখার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
 
অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিষয়ে একাধিকবার সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।  

জানা যায়, টাকা দিয়েও উপবৃত্তি না পেয়ে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামানের কাছে তাদের টাকা ফেরত চায়। এসময় অধ্যক্ষ তাদের টাকা ফেরত দেবেন বলে জানান। তবে, উপবৃত্তি দেওয়ার জন্য ফরম পূরণ ও মোবাইলে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয়নি মর্মে শিক্ষার্থীদের লিখিত দিতে বাধ্য করেন।  

এ বিষয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে ইন্দুরকানী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। পরে, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) এ বিষয়ে সংবাদ সংগ্র্রহের জন্য কয়েকজন সংবাদকর্মী কলেজে গেলে অধ্যক্ষ তাদের দিকে তেড়ে আসেন ও পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন।

ইন্দুরকানী সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক পরীক্ষা দেওয়া হ্যাপি আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, উপবৃত্তি দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে মো. আবুল বাশার ও শৈলেন্দ্রনাথ ১ হাজার ৬২০ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু, আমি উপবৃত্তি পাইনি।

একই শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপি আক্তার বলেন, আমার কাছ থেকে পিয়ন আবুল বাশার ১ হাজার ১৫০ টাকা নিয়েছেন। এখন টাকা ফেরত চাইলে আমাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি বলে অধ্যক্ষ লিখিত রেখেছেন।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে মো. আবুল বাশার বলেন, অধ্যক্ষের নির্দেশেই শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়ার জন্য তাদের কাছ থেকে আমি ও শৈলেন্দ্রনাথ টাকা নিয়েছি।

তবে, অধ্যক্ষ মো. মনিরুজ্জামান সিকদারের সঙ্গে কথা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে বাংলানিউজকে জানান। এসময় সাংবাদিকদের পুলিশের দিতে চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো সদ্যুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।