ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কেরানীগঞ্জে অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে প্রশাসন

কেরানীগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
কেরানীগঞ্জে অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে প্রশাসন

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): কেরানীগঞ্জে অবস্থিত সব অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। 

এরই ধারাবাহিকতায় গত দুই দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালত উপজেলার ছয়টি কারখানা সিলগালা করে দিয়েছে। পাশাপাশি আগামী এক মাসের মধ্যে জনপ্রতিনিধিদের পুরো কেরানীগঞ্জের অবৈধ কারখানার একটি তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কামরুল হাসান সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, কেরানীগঞ্জে কোনো অবৈধ কারখানা চলতে দেওয়া যাবে না। ইতোমধ্যে আমরা ছয়টি কারখানা সিলগালা করেছি। এরমধ্যে একটি কারখানার মালিকপক্ষ রাষ্ট্রীয় আদেশ অমান্য করে কারখানা চালু করার চেষ্টা করলে রোববার ওই কারখানায় আবারও অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

কেরানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত দেবনাথ বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু স্যার আমাদের নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে কেরানীগঞ্জের সব কারখানার তালিকা করা হবে। পর্যায়ক্রমে এসব কারখানা বিসিক শিল্প নগরীতে স্থানান্তর করা হবে। অবৈধ কারখানাগুলো একেবারেই বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকার ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানায় আগুন লাগে। ঘটনার সময় শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। তখন হঠাৎই গ্যাস রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।  

ইঞ্জিনিয়ার এসে শ্রমিকদের আগুন লাগার খবর দেয়। এরপর শ্রমিকরা পানি ও কারখানায় থাকা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে তখনই তারা দগ্ধ হয়।

এ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০ হাজার স্কয়ার ফিট কারখানাটির ভেতরের সব মালামাল ও যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জাকির হোসেন (২২) নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রায় ৩৫ জনকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে আহতদের মধ্য থেকে বিভিন্ন সময় ১৩ জনের মৃত্যু হয়।

‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানায় গত দুই বছরে তিনবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যার দুটোই ঘটেছে চলতি বছরে। প্রতিটি অগ্নিকাণ্ড ছিল ভয়াবহ।  

২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর কারখানাটিতে প্রথম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপর চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো আগুন লাগে। তবে ওই দু’টি অগ্নিকাণ্ডে কারখানার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সর্বশেষ বুধবার তৃতীয়বারের মতো আগুন লাগে কারখানাটিতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।