ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৭১তম বার্ষিকী উদযাপন

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৭১তম বার্ষিকী উদযাপন মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৭১তম বার্ষিকী উদযাপন

ঢাকা: অন্তর্ভূক্তিমূলক ও সহিষ্ণু সমাজ গঠনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। এসব মানবাধিকার সুরক্ষায় সরকার ও নাগরিক সংগঠনগুলোকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। ‘স্পিক আপ ফর ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন, ফ্রিডম অব রিলিজিয়ন/বিলিফ অ্যান্ড মাইনরটিজ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারা একথা বলেন। 

মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৭১তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং মত প্রকাশের অধিকার বিষয়ক সংগঠন আর্টিকেল নাইনটিন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ডেনমার্ক দূতাবাস এ অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা করে।


 
আর্টিকেল নাইনটিন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। বিশেষ  অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন।  মূল আলোচনা পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আবেদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী তানিয়া আমির, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী কার্যালয়ের সিনিয়র হিউম্যান রাইটস অ্যাডভাইজার হেইকে আলেফসেন এবং মুক্ত প্রকাশ- ফোরাম ফর ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশনের  (ফেক্সবি) চেয়ারপারসন  সৈয়দা আইরিন জামান। একাত্তর টেলিভিশনের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর মিথিলা ফারাজানা আলোচনা পর্ব সঞ্চালন করেন। অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, অনলাইন এক্টিভিস্ট, মানবাধিকারকর্মী ও বিভিন্ন এনজিওর  প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, ‘বর্তমান কমিশন মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। সম্প্রতি কমিশনের সঙ্গে আর্টিকেল নাইনটিনের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এছাড়া কমিশন ইতিমধ্যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক কমিটির পুনর্গঠনে কাজ শুরু করেছে। এ কাজে আর্টিকেল নাইনটিনসহ অন্য মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলোকেও যুক্ত করা হবে। ’

বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সমাজের মূল ভিত্তি। এর উদ্দেশ্য শুধুমাত্র জ্ঞান বাড়ানোর জন্য মত বিনিময় নয়; বরং মানুষের রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিক ক্ষমতায়নের প্রকাশই হচ্ছে বাক স্বাধীনতার লক্ষ্য। ’ 

তিনি বলেন,  এটা এমন একটা অধিকার যা একটি সমাজ অবিচারের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে ‘না’ বলতে সক্ষম। উদাহরণ হিসেবে তিনি নুসরাত হত্যা, আবরার হত্যা এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে হওয়া প্রতিবাদ ও আন্দোলনের বিষয়টি তুলে ধরেন।  

তিনি বলেন, সাংবাদিক, ব্লগার, মানবাধিকার এবং নাগরিক সংগঠন নিজেদের দায়িত্ব যাতে হুমকি ও ভয়ভীতি এড়িয়ে পালন করতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।  

অনুষ্ঠানে আর্টিকেল নাইনটিনের ২০১৯ সালের বৈশ্বিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য (গ্লোবাল এক্সপ্রেশন রিপোর্ট) তুলে ধরে বাংলাদেশ সংগঠনটির বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সাল বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা চর্চায় বাংলাদেশ পিছিয়ে। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অগ্রগতিকে ম্লান করেছে।  

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানিয়া আমির বলেন, মানবিক মর্যাদার নিশ্চয়তার দিক থেকে বাংলাদেশের সংবিধান গোটা বিশ্বে অনন্য। সংখ্যালঘু এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দুই ভাবে বাধাগ্রস্থ হয়।  সরকার ও এর বাইরের প্রভাবশালী শক্তি বিভিন্ন সময়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্থ করে।  

আবেদ খান বলেন, সংখ্যাঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি স্থানীয় নয়, বৈশ্বিক ইস্যু। বাংলাদেশে ধর্ম বা বিশ্বাসের অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। কিন্তু এ বিষয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আমরা  ‘সেলফ- সেনসরশিপ’ আরোপ করি।  ধর্ম বা বিশ্বাস বিষয়ক কোন আলোচনা মুক্ত পরিসরে করার সুযোগ এখন নাই।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
টিআর/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।