ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারে ইতিবাচক ফলের আশা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯
রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারে ইতিবাচক ফলের আশা

ঢাকা: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহিদুল হক বলেছেন, রোহিঙ্গা নির্যাতন ও বিতাড়নের বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) ও ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে (আইসিসি) নেওয়া উদ্যোগের ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে হোটেল ব্লুবেরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) উদ্যোগে ‘রোহিঙ্গা ক্রাইসিস: হোয়াই অ্যাকাউন্টিবিলিটি’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, রোহিঙ্গা নিপীড়নের জবাবদিহিতায় আইসিজে এবং আইসিসিতে নেওয়া উদ্যোগের ব্যাপারে ইতিবাচক ফলাফলের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।

রোহিঙ্গা নিপীড়ন বা রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার কোনো বিষয় নয়। এটি মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের জনগণের বিষয়। তবে বিষয়টি তাদের অনেক দূর তাড়া করবে।

আলোচনায় বক্তারা রোহিঙ্গা সংকটের বিভিন্ন দিক এবং সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে জেনোসাইডের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরূদ্ধে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা মামলার অন্তবর্তী আদেশের শুনানির বিষয়ে আলোচনা করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের  মহাপরিচালক (ডিজি, ইউএন শাখা) নাহিদা সোবহান বলেন, আইসিজেতে মামলার শুনানিতে মিয়ানমার দাবি করেছে, রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা হলেও তা জেনোসাইড নয়। নৃশংসতার ব্যাপারে মিয়ানমারের এই স্বীকারোক্তিকে আইসিসি আমলে নিতে পারে। মিয়ানমার আইসিসির বিচারিক এখতিয়ার অস্বীকার করে আসছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর) মাসুদ বিন মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে দ্বিপক্ষীয়, বহুপক্ষীয় এবং জবাবদিহিতার উদ্যোগ প্রয়োজন। আইসিজের অন্তবর্তী আদেশের শুনানির ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।

স্বাগত বক্তব্যে সিজিএস পরিচালক ও ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, হেগ এর আদালতে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা)’ নাম বলতে গিয়েই কেবল ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ উচ্চারণ করেছেন। এর বাইরে তিনি একবারের জন্যও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি। এটিও জেনোসাইডের লক্ষণ।

এসময় বক্তারা রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ আদালতের সাম্প্রতিক শুনানিতে যৌথ আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মতে, এই আদালতে রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ, দুটোই রয়েছে।

বক্তারা বলেন, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার কার্যক্রমের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো প্রভাব বিস্তার করবে না। গণহত্যার অপরাধ, শাস্তি ও প্রতিরোধ বিষয়ক কনভেকশনের প্রয়োগ সর্ম্পকে মিয়ানমার ও গাম্বিয়ার প্রতিনিধিরা মামলার গণশুনানিতে অংশ নেবে।

তারা বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। এছাড়া তাদের মধ্যে আস্থা বাড়ানোও জরুরি।

কানাডিয়ান হাইকমিশনার বিনোয়েট প্রিফোনটেইন বলেন, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজ) যা ঘটেছে তা নিয়ে আমরা শিহরিত। বিচারকার্য সম্পন্ন হতে পাঁচ থেকে দশ বছরের বেশি সময় লাগতে পারে। রায়ের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর) মাসুদ বিন মোমেন, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস মিশনের উপ-প্রধান জেরোইন স্টেঘস, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সরোয়ার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি গবেষক মফিদুল হক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি (ইউএন শাখা) নাহিদা সোবহান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯
এসই/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।