ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

নতুন বছরেও অনশনে পাটকল শ্রমিকরা, অসুস্থ শতাধিক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২০
নতুন বছরেও অনশনে পাটকল শ্রমিকরা, অসুস্থ শতাধিক

খুলনা: শুরু হয়েছে নতুন বছর। কিন্তু, সবার জন্যই তা নতুন আশা আর আনন্দ বয়ে আনেনি। গত বছরের মতো এ বছরের শুরুতেও মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন পাটকল শ্রমিকরা। এরই মধ্যে প্রচণ্ড শীত ও ক্ষুধায় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন।

বুধবার (১ জানুয়ারি) চতুর্থ দিনের মতো অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন খুলনার ৭টি পাটকলের শ্রমিকরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা এ অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

অনশনে অসুস্থ শ্রমিকদের ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রমিক নেতা মুরাদ হোসেন বলেন, বেশি অসুস্থদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের অনশনস্থানেই স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে এ মুরাদ জানান, নতুন বছরেও আমাদের জন্য কোনো সুসংবাদ আসেনি। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) খুলনা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতাদের আলোচনা জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু কোনো শ্রমিকনেতাই ওই আলোচনায় যাননি। কারণ, এর আগেও অনেক বৈঠক হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকদের কোনো দাবি পূরণ হয়নি।

অনশনরত শ্রমিকরা জানান, মাসের পর মাস মজুরি-ভাতাসহ অন্যান্য দাবি না পূরণ হওয়ায় শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাদের সংসার আর চলছে না। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই তারা মিল ছেড়ে রাস্তায় নেমেছেন। সভা-সমাবেশ-বিক্ষোভ মিছিলে কাজ না হওয়ায় শেষমেশ শুরু করেছেন আমরণ অনশন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কারো পক্ষে ঘরে ফেরা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন অনশনরত শ্রমিকরা।

এর আগে শ্রমিকদের দাবি নিয়ে গত বছরের ১৫, ২২ ও ২৬ ডিসেম্বর তিন দফা বৈঠক হলেও কোনো সুফল আসেনি। সর্বশেষ ২৬ ডিসেম্বরের বৈঠকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় ২৯ ডিসেম্বর দুপুর থেকে পুনরায় অনশন করার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। সেই ঘোষণা অনুসারেই এ অনশন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।  

বিজেএমসি সূত্রে জানা যায়, খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ব ৯ পাটকলের মধ্যে যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল বাদে বাকি ৭টি পাটকলের উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ পাটকলগুলোতে প্রতিদিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৭২ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। কিন্তু বন্ধ থাকায় প্রতিদিন  প্রায় কোটি টাকার পাটপণ্য উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাটকলগুলো।  অন্যদিকে সার্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমানে চালু থাকা দুটি পাটকলে উৎপাদিত হচ্ছে মাত্র ৮৬.৩৯ মেট্রিক টন পাটপণ্য।  

এর বাইরে শ্রমিকদের অনশনস্থল খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের বিআইডিসি সড়কেও কিছু দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২০
এমআরএম/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।