মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সদ্য সমাপ্ত ঢাকা সিটি নির্বাচনের নিউজ কাভার করতে গিয়ে সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, ফটো সাংবাদিক ওসমান গণি ও সাংবাদিক উজ্জ্বল হোসেনসহ আরও কয়েক সাংবাদিকের ওপর হামলা করা হয়।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নিউজ কাভার করতে গিয়ে হামলার শিকার সারাবাংলা ডটকমের সাংবাদিক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, নির্বাচন চলাকালীন বিনা কারণে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রাসী জোর করে আমাকে ধরে বলতে শুরু করে, আমি নাকি ছবি তুলেছি, ভিডিও করেছি। কথা বলতে বলতেই তারা আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। আমি মোবাইল ফোন চাইলেও তারা ফেরত দেয়নি। উল্টো শার্টের কলার ধরে টেনে বের করে দিয়েছে। শত শত লোকের সামনে গলায় অফিসের আইডি ও নির্বাচন কমিশনের দেওয়া কার্ড নিয়ে মাথা নিচু করে আমাকে ওই এলাকা ছাড়তে হয়। এটা সাংবাদিক হিসেবে আমার জন্য লজ্জার, অপমানের। এ নিয়ে আমি এখনও ট্রমার মধ্যে আছি।
আহত, নির্যাতিত সাংবাদিকদের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তহবিল থেকে চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে হবে। এছাড়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা ও তাদের সুরক্ষার দাবি তুলে ডিইউজের সভাপতি আবু জাফর সূর্য বলেন, মাঠে নেমে এখনও পর্যন্ত আমরা কোনো সাংবাদিক হত্যা, হামলা, নির্যাতনের সুবিচার আদায় করতে পারিনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও কী সাংবাদিকদের ওপর হামলা-নির্যাতনের দৃশ্য চোখে পড়ে না?
‘নির্যাতিত সাংবাদিকদের অপরাধ তারা সত্য সংবাদ সংগ্রহের কাজে নেমেছিল। বাক স্বাধীনতার জন্য, গণতন্ত্র মানবতার জন্য সাংবাদিকরা লড়াই করে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা মার খাচ্ছি। আজো গণমাধ্যমকর্মী আইন পাশ করা হয়নি। ওয়েজবোর্ড পাশ করা হলেও তা কার্যকর হয়নি। সব ক্ষেত্রেই আমরা পদে পদে নির্যাতিত হচ্ছি সব ক্ষেত্রেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিনীত অনুরোধ, কয়েক দিনের মধ্যেই সাংবাদিক নির্যাতনকারী, হেনস্থাকারী, হামলাকারীদের গ্রেফতারে কার্যকরী পদক্ষেপ নিন। ’
রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, আমরা সব সাংবাদিকরাই নির্যাতিত হচ্ছি, অথচ হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা হতে পারে না। একজন সাংবাদিককে কোপানো হবে, আবার হাসপাতালে গিয়ে হুমকিও দেওয়া হবে, এটা পুরো সাংবাদিক সমাজের জন্য লজ্জা। আমি মনে করি, বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার সময় এসেছে। সাংবাদিক হামলায় সংশ্লিষ্ট বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতাসহ অবিলম্বে বাকিদের গ্রেফতার করা হোক।
সমাবেশে জানানো হয়, সাংবাদিকদের হামলার বিরুদ্ধে আনা সব দাবি মানা না হলে আগামী রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় স্বরাষ্ট্র ও তথ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
সমাবেশে উপস্থিত থেকে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ ওম্মুল ওয়ারা সুইটি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুক্কুর আলী শুভ, সাংবাদিক নেত্রী নাছিমা সোমা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২০
পিএস/এমএমআই/এইচজে