ব্যানারটিতে দেখা যায়, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা’- শীর্ষক ব্যানারটির নিচে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো ব্যবহার করে লেখা ‘সঙ্গীত বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’। এক পাশে রয়েছে রক্তের ছটার উপর শহীদ সাত বীরশ্রেষ্ঠর ছবি, অপর পাশে রয়েছে শহীদ মিনারের ছবি।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে বিভাগের সামনে থেকে র্যালি নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে সেখান থেকে পুনরায় বিভাগের সামনে এসে র্যালি শেষ হয়।
বিভাগের শিক্ষকদের দাবি, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত সব শহীদদের স্মরণ করে এ ধরনের ব্যানার তৈরি করা হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকরা বলছেন, এর মাধ্যমে ভাষাশহীদদের অসম্মান জানানো হয়েছে। ভাষাশহীদ ও বীরশ্রেষ্ঠ সবাই আলাদা আলাদা প্রেক্ষাপটে ও স্বতন্ত্রভাবে সম্মানীয়। ভাষা দিবসের ব্যানারে বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি অনাকাঙ্ক্ষিত। এতে নতুন প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তারা ভাষাসৈনিক ও বীরশ্রেষ্ঠদের এক করে ফেলতে পারে।
জানতে চাইলে সঙ্গীত বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক দীনবন্ধু পাল বলেন, সব শহীদদের স্মরণ করে এ ধরনের ব্যানার তৈরি করা হয়েছে। র্যালিতে অংশগ্রহণকারীদের হাতের ফেস্টুনে বীরশ্রেষ্ঠ এবং ভাষা শহীদ সবারই ছবি ছিল। কিন্তু যখন ছবি তোলা হয়েছে তখন হয়ত অংশগ্রহণকারীরা ফেস্টুন নামিয়ে নিয়েছিলেন। তাই হয়তো ভাষাশহীদদের সেসব ফেস্টুন আসেনি। এখানে কাউকে ছোট কিংবা বড় করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও মুক্তিযোদ্ধা সরকার সুজিত কুমার বলেন, ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত যাই হোক, এ ধরনের ভুল অমার্জনীয়। এর মাধ্যমে ভাষাশহীদদের প্রতি অসম্মান জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম বলছেন, আদি মানবিকের একটি শাখা সংগীত বিভাগের এ ধরনের ভুল অমার্জনীয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, তারা নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছে। আশা করছি তারা ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সতর্ক হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল বলেন, এখন আমরা আবেগ ও শ্রদ্ধাবোধের জায়গা থেকে না করে, নিজেকে জাহির করার জন্য মেতে আছি বলেই এমন ভুল হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০
আরএ