রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে পাটগ্রাম উপজেলা বুড়িমারী ইউনিয়নের নামাজারী গ্রামে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। তিনি ওই গ্রামের কাচু বাউয়ের ছেলে।
আমিনুর রহমানের ভাই সামিউল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘদিন পাথর শ্রমিকের কাজ করেছেন আমিনুর রহমান। পেটের দায়ে পাথর ক্রাশিং কারখানায় কাজ করার একপর্যায়ে সিলোকোসিস রোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। সংসারের সঞ্চিত টাকা ও বসতভিটা বিক্রি করে চিকিৎসা করার পরেও উন্নতি না হয়ে দিনদিন অবনতি ঘটতে থাকে। পরে রোববার দিনগত রাতে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি।
এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি সিলোকোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বুড়িমারী পাথর শ্রমিক সুরক্ষা কমিটির সভাপতি মমিন মিয়া। যিনি আহত শ্রমিকদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তার মাধ্যমে বুড়িমারীর পাথর শ্রমিকদের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) মাধ্যমে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে। তবে এ রোগে আক্রান্ত কোনো রোগীই সুস্থ জীবন ফিরে পায়নি। বরং প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হচ্ছেন শ্রমিকরা। এরপরেও থেমে নেই পাথর ক্রাশিং মেশিনের কার্যক্রম। নেই শ্রমিকদের সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা।
জানা যায়, ২০০০ সালে সর্বপ্রথম বুড়িমারী স্থলবন্দরে ভিক্টরি মোজাইক কোম্পানি নামে একটি ক্র্যাশার মেশিন স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে বাড়তে থাকে পাথর ক্র্যাশার মেশিনের সংখ্যা। একই সঙ্গে বাড়তে থাকে সিলোকোসিসে শ্রমিক মৃত্যুর সংখ্যাও। বেসরকারি একটি সূত্রমতে এ পর্যন্ত ৭৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে মরণঘাতি সিলোকোসিসে। সর্বশেষ মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হলেন পাথর শ্রমিক আমিনুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০
আরএ