ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‘ভারতের জন্য যেন বাংলাদেশকে জবাবদিহি না করতে হয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২০
‘ভারতের জন্য যেন বাংলাদেশকে জবাবদিহি না করতে হয়’ বক্তব্য রাখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

ঢাকা: প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্ককে `সোনালি অধ্যায়' বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমরা আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করেছি। ভারতে কিছু হলে এখানেও প্রভাব পড়ে। আমরা ভারতকে বলেছি, এমন কিছু করবেন না যাতে জনগণের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়, যেহেতু আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত।’

বুধবার (০৪ মার্চ) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ কূটনীতি: এক দশকে বিশ্বে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিনিয়োগ ও রফতানি বাড়ানো, দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি, এ চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কূটনীতি সাজিয়েছি।

 কূটনীতিতে এমনভাবে কাজ করতে হয়, যাতে জাতির লাভ হয়। আমাদের কূটনীতির প্রধান একটি দিক যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আরেকটি চীন ও ভারত। তাদের ব্যালেন্স করে কূটনৈতিক সম্পর্ক রেখে আমরা এগোচ্ছি।  সেই সঙ্গে আমাদের মুসলিম দেশগুলোর সহযোগিতাও আমরা মাঝেমধ্যে পাই। ’

তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টস আমাদের আয়ের বড় উৎস। ইউরোপ ও আমেরিকা মানবাধিকারকে বেশি গুরুত্ব দেয়, মাঝেমধ্যেই বিচার হয় না বলে হৈচৈ করে। এজন্য রফতানি আয় বাড়াতে ট্রাফিক ইন ট্রাইব্যুনাল তৈরি করছি। এছাড়াও লাইফ চেঞ্জার প্রোগ্রাম চালু করেছি। এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে জনশক্তি রফতানি করা হবে। আমরা বাস্তববাদী, সেটি উপলব্ধি করে কাজ করছি। ’

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ কূটনীতি: এক দশকে বিশ্বে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী২০২৪ সালে এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে বের হয়ে আসলে কিছু সুযোগ সুবিধা হারাতে পারে বাংলাদেশ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেই জন্য আমরা একটি উইং চালু করেছি। সেটি মাথায় রেখেই কাজ করছি। আমাদের সামনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ রোহিঙ্গা, আমরা এ বিষয়ে কৌশলগত অবস্থান নিয়েছি। ’

পাবলিক ডিপ্লোম্যাসির ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘৩৩টি দেশে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন তৈরি করেছি, যার মাধ্যমে বিভিন্ন সেমিনার হচ্ছে। বাংলাদেশকে তুলে ধরা হচ্ছে। ’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী দু’ বছর আমাদের জন্য স্বর্ণযুগ। এবছর মুজিববর্ষ। তার পরের বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি। এ দু’বছরে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে নতুন করে ব্র্যান্ডিং করতে চাই। ব্র্যান্ডিং পরিবর্তন হলে বিনিয়োগ আসবে। এজন্য নতুন অনেক দেশে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা ১০০ ইকোনমিক জোন ও ২৮টি হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির কথা তুলে ধরছি, যাতে বিদেশিরা সেখানে বিনিয়োগ করে। আমরা ভাগ্যবান জাতি, আমাদের বেশিরভাগ তরুণ। তাদের কাজে লাগাতে পারলেই পরিবর্তন সম্ভব হবে। ’

মূল প্রবন্ধে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ গত এক দশকে যে উন্নতি করেছে, তা আজ সারা বিশ্বে প্রশংসিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অভাবনীয় উন্নতির মূল ব্যক্তি। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়নে দৃষ্টান্ত। প্রতিবেশীদের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যু আন্তরিকভাবে সমাধান করেছে। ’

ডিকাব সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টির সভাপতিত্বে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফেরদৌস, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান ও ডিকাবের সাবেক সভাপতি মাসুদ করিম প্রমুখ।  সেমিনারে সাবেক কূটনীতিবিদ ও কূটনৈতিক প্রতিবেদকরা অংশ নেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২০
টিএম/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।