রাজউক সূত্র জানায়, ২০১০ সালে প্রগতি সরণি থেকে বালুনদী পর্যন্ত ৬.৭১ কিলোমিটার ইন্টারসেকশন সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২৩১ কোটি পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প ২০১৩ সাল নাগাদ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।
সম্প্রসারিত এ প্রকল্পের আওতায় ১০০ ফুটের মাদানী এভিনিউয়ে তিন নম্বর ব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রেই বাধে জটিলতা। সেখানে পাঁচখোলা খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে খালটি ভরাট করে ১০০ ফুট প্রশস্ত রোড নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে খাল পেরিয়ে অন্তত দেড়শ গজ পূর্ব দিকের ফসলি জমিতে খাদ খনন করা হয় এবং এ খাদের ওপরেই চলে ব্রিজ নির্মাণের কাজ।
সম্প্রতি পাঁচখোলা খালের সঙ্গে ঘুরপথে খননকরা খাদের সংযুক্তি ঘটানো হয়েছে- এক্ষেত্রেও ব্যক্তি মালিকানার ফসলি জমি অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী একরাম আলী, আবদুর রহমান, মাজম আলীসহ কয়েকজন জানান, সর্বশেষ সিটি জরিপ অনুযায়ী ৯০৮, ৯০৯ ও ৯২৪ নম্বর দাগেই তাদের পূর্বপুরুষের জায়গা-জমি। যুগ যুগ ধরেই এসব জমি চাষাবাদের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ হয়। পাঁচখোলা খালসংলগ্ন থাকায় এসব জমিতে প্রতি বছর দুই দফা ধান আবাদ এবং প্রচুর পরিমাণ সবজি উৎপন্ন হতো। কিন্তু রাজউকের সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় হঠাৎ করেই সেসব ফসলি জমিতে খাদ বানিয়ে তার ওপর ব্রিজ নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলতে থাকে। এ ব্যাপারে রাজউকের কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা মিলছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ সরাসরি রাজউক চেয়ারম্যানকে পাঠানো ডিও লেটারের মাধ্যমে সরকারি পাঁচখোলা খালের ওপরই ব্রিজ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ পাঠনো সংসদ সদস্যের পাঠনো ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যৌথ উদ্যোগে সরেজমিন সার্ভে সম্পন্ন হলেও সে বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এ চিঠির তাগিদের পরও পেরিয়ে গেছে চারটি বছর। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর ন্যায্য দাবি-দাওয়া ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের তাগিদপূর্ণ নির্দেশনা মোটেও আমলে নেওয়া হয়নি। বরং তিন নম্বর ব্রিজটির সম্প্রসারিত নির্মাণ কাজও ফসলি জমিতে শুরুর উদ্যোগ নেওয়ায় সংসদ সদস্য পুনরায় চিঠির মাধ্যমে রাজউক চেয়ারম্যানকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি চিঠি পাঠানোর পরও ব্যক্তিমালিকানার জমিতেই ব্রিজ নির্মাণ কর্মকা পরিচালনা করতে দেখা গেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। এদিকে এ ব্যাপারে গতকালও স্থানীয় সংসদ সদস্য আরেকটি চিঠি দিয়েছেন রাজউককে। এ ছাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ এলাকাবাসী বলছেন, রাজউককে অবশ্যই জন দাবি মানতে হবে।
বাংলাদেশসময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২০
এমএ/