ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

জ‌রিমানা দি‌য়ে মামলা থেকে অব‌্যাহ‌তি পে‌লেন ড. ইউনূস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২০
জ‌রিমানা দি‌য়ে মামলা থেকে অব‌্যাহ‌তি পে‌লেন ড. ইউনূস

ঢাকা: সাড়ে সাত হাজার টাকা জ‌রিমানা দি‌য়ে শ্রম আইনের বিধান না মানার অভিযোগে দায়ের ফৌজদারি মামলার দায় থে‌কে অব‌্যাহ‌তি পে‌লেন গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের চেয়ারম্যান শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

গত ৫ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক রহিবুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) তরিকুল ইসলাম। মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা, পরিচালক আ. হাই খান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (জিএম) গৌরি শংকরকে বিবাদী করা হয়।

গত ১৩ জানুয়ারি এ মামলায় বিবাদী‌দের প্রতি সমন জা‌রি ক‌রেন আদালত। গত ২০ ফেব্রুয়া‌রি ইউনূ‌সের প‌ক্ষে দোষ স্বীকার ক‌রে নি‌য়ে অভিযোগ থে‌কে খালাস চান তার আইনজীবীরা।

তার অন‌্যতম আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম সাংবা‌দিক‌দের ব‌লেন, আমরা আদালত‌কে ব‌লে‌ছি শ্রম আই‌নে অপরাধ স্বীকার কর‌লে খালাস দেওয়ার বিধান আছে। তাই আমরা দোষ স্বীকার ক‌রে নি‌চ্ছি এবং ভ‌বিষ‌্যতে তা প্রতিপাল‌নের অঙ্গীকার কর‌ছি। তাই অভিযোগ থে‌কে বিবাদী‌দের অব‌্যা‌হ‌তি দেওয়‌া হোক। আদালত চারজন‌কে সা‌ড়ে সাত হাজার টাকা ক‌রে জ‌রিমানা ক‌রে অভিযোগ‌টি নিষ্প‌ত্তি ক‌রে তা‌দের খালাস দি‌য়ে‌ছেন।
 
ত‌বে আগেই এই মামলায় জা‌মিন নেন ইউনূস। ব‌্যক্তিগত হা‌জিরা থে‌কে অব‌্যাহ‌তি পাওয়ায় ২০ ফেব্রুয়া‌রি ইউনূস আদাল‌তে হা‌জির ছি‌লেন না ব‌লেও জানান এই আইনজীবী।

আদালত সূত্র জানায় ইতোম‌ধ্যে জ‌রিমানার টাকাও প‌রি‌শোধ করা হ‌য়ে‌ছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলার বাদী ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর গ্রামীণ কমিউনিকেশনসে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ১০টি বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে দেখতে পান। গত ৩০ এপ্রিল বাদীপক্ষের এক পরিদর্শক প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে ত্রুটিগুলো সংশোধনের নির্দেশনা দেন। এরপর ৭ মে ডাকযোগে বিবাদী পক্ষ এ বিষয়ে জবাব দেন। তবে জবাব সন্তোষজনক হয়নি বলে গত ২৮ অক্টোবর বর্তমান পরিদর্শক আবারও তা অবহিত করেন। তবে বিবাদীরা নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করে বিবাদীরা ফের সময়ের আবেদন করেন। আবেদনের সময় অনুযায়ী তারা জবাব দাখিল না করায় প্রতীয়মান হয় যে, বিবাদীরা শ্রম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন।

এমতাবস্থায় বিবাদীরা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৩ ধারা ৩৩ (ঙ) এবং ৩০৭ মোতাবেক দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন মর্মে বাদী অভিযোগ করেন।  

গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের বিরুদ্ধে যেসব বিধি লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘বিধি মোতাবেক শ্রমিক/কর্মচারীদের নিয়োগপত্র, ছবিসহ পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বহি দেওয়া হয়নি, শ্রমিকের কাজের সময় এর নোটিশ পরিদর্শকের নিকট হতে অনুমোদিত নয়, কোম্পানিটি বার্ষিক ও অর্ধবার্ষিক রিটার্ন দাখিল করেনি,  কর্মীদের বৎসরান্তে অর্জিত ছুটির অর্ধেক নগদায়ন করা হয় না, কোম্পানির নিয়োগবিধি মহাপরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত নয়, ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি ও উৎসব ছুটি প্রদান-সংক্রান্ত কোনো রেকর্ড/রেজিস্টার সংরক্ষণ করা হয় না, কোম্পানির মুনাফার অংশ ৫% শ্রমিকের অংশগ্রহণ তহবিল গঠনসহ লভ্যাংশ বণ্টন করা হয় না, সেফটি কমিটি গঠন করা হয়নি, কর্মীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করালেও কোনো ঠিকাদারি লাইসেন্স গ্রহণ করেননি এবং কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করেনি। ’

ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের কারণে গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চাকরিচ্যুত তিন কর্মীর পৃথক তিনটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে একই আদালত গত ৯ অক্টোবর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। পর ৩ ন‌ভেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদাল‌তের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জা‌কিয়া পারভী‌নের আদাল‌ত থেকে আত্মসমর্পণ ক‌রে জা‌মিন পান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২০
কেআই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।