রোববার (১৫ মার্চ) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে ডিআরইউয়ের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ এবং সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দেয়া হয়। এ সময় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু ডিআরইউয়ের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীসহ সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, অত্যন্ত পরিতাপের সাথে জানাচ্ছি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির দুই স্থায়ী সদস্য মাছরাঙা টেলিভিশনের সাবেক বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনী হত্যাকাণ্ডের আট বছর অতিক্রান্ত হলেও আজো তাদের হত্যার কোনো কুলকিনারা হয়নি। এজন্য অবিলম্বে খুনিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে হবে। ৮ বছরেও চার্জশিট দিতে না পারার কারণ তদন্ত করতে হবে। পাশাপশি দ্রুততম সময়ে এই মামলার চার্জশিট দিয়ে বিচার কাজ সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় ডিআরইউ বৃহত্তর সাংবাদিক সমাজকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে এবং চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।
স্মারকলিপিতে জানানো হয়, ৭১ বার সময় নেওয়ার পরে মহামান্য হাইকোর্টে র্যাবের পক্ষ থেকে যে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে, তাতেও নতুন কোনো অগ্রগতি নেই। তদুপরি, অপরাধীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে এই প্রতিবেদন কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি না। দীর্ঘদিন বিচার না পেয়ে সাগর-রুনীর পরিবারের পাশাপাশি গোটা সাংবাদিক সমাজ হতবিহ্বল। ক্ষোভে বাকরুদ্ধ মেহেরুন রুনীর মা নুরুন্নাহার মির্জা, সাগর সরওয়ারের মা সালেহা মুনির। কিন্তু এখনো বিচারের আশা ছাড়েননি বয়োবৃদ্ধ দুই মা, সাগর-রুনীর শিশুপুত্র মাহীর সরওয়ার মেঘ ও সাংবাদিক সমাজ। এ অবস্থায় সাগর-রুনী হত্যার কার্যকর বিচার দাবিতে ডিআরইউয়ের অবিচল অবস্থান এখনো বিচ্যুত হয়নি। অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছেড়ে যাবে না রিপোর্টারদের প্রাণের এই সংগঠন।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, যে কোনো হত্যার বিচার পাওয়া নাগরিকের অধিকার। আর রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকের সেই অধিকার নিশ্চিত করা। আমাদের সুযোগ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বড় বড় হত্যা রহস্য উন্মোচন ও অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করেছে। সাগর-রুনী হত্যার কোনো কূলকিনারা তারা করতে পারবে না এটা আমরা বিশ্বাস করি না। কোনো অদৃশ্য শক্তি বা বাধার কারণে নৃশংস এই হত্যার তদন্তের নামে বছরের পর বছর কালক্ষেপণ করা হচ্ছে কি-না সেটাই এখন বড় রহস্য।
আমরাও মনে করি সাগর-রুনীর চাঞ্চল্যকর এই হত্যার বিচার হলে সরকারের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হবে। সাগর-রুনী কেন খুন হলেন? কারা এই খুনের সাথে জড়িত তা জানতে চায় দেশবাসী।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজা বাজারের ভাড়া বাসায় তাদের শিশুপুত্রের সামনে নির্মমভাবে খুন হন এই সাংবাদিক দম্পতি। দীর্ঘ আট বছরেও চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতে পারেনি পুলিশ ও র্যাবসহ সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত পুলিশ, সিআইডি, ডিবি ও সবশেষে র্যাবের কাছে দেওয়া হয়েছে। তারাও এই হত্যাকাণ্ডের কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। তদন্তের আগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্ত সংস্থা আদালত থেকে ৭১বার সময় নেওয়ায় জনমনে হতাশা ও সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২০
জিসিজি/এজে