ঢাকা: চলতি বছরের ২০ এপ্রিলের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সকল মশক নিধন কর্মীদের বায়োমেট্রিক ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসার নির্দেশনা দিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
একইসঙ্গে মশক নিধন কার্যক্রমে সব মশক নিধন কর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতেও নির্দেশ দেন তিনি।
শনিবার (২০ মার্চ) সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রম পরবর্তী এক মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের এমন নির্দেশনা দেন মেয়র।
এ সভায় মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় গত ৮-১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রম সম্পর্কে ডিএনসিসির বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী, মশক নিধনকর্মী, পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক, মশক সুপারভাইজাররা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
মেয়র সবার বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সে অনুযায়ী আসন্ন বর্ষা মৌসুমে মশক নিধন কার্যক্রমের জন্য দিক-নির্দেশনা দেন বলে ডিএনসিসি সূত্রে জানানো হয়।
বায়োমেট্রিক হাজিরা ও ট্র্যাকার স্থাপনের জন্য তিনি আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেন। এপ্রিলের ২০ তারিখের মধ্যে এই কাজটি সম্পন্ন করার জন্য তিনি সময় বেঁধে দেন।
মেয়র বলেন, প্রত্যেক মশক নিধন কর্মীর ট্র্যাকার লাগিয়ে মনিটরিং করতে হবে। মশক নিধন সুপারভাইজাররা মনিটরিং করবেন। কাউন্সিলরদেরও মনিটরিং করবেন। যত বেশি আত্মসমালোচনা করা যাবে, তত বেশি গ্যাপ কমানো যাবে। অভিযান চলাকালে আমি আমাদের বারোশো মশক নিধন কর্মীর হাজিরা দেখতে চাই, কিন্তু সেটা পাইনি। তাই প্রত্যেক মশক সুপারভাইজারকে তার নিজ নিজ ওয়ার্ডের মশক নিধন কর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়াও শনিবারের (২৭ মার্চ) মধ্যে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের ডোবা, জলাশয়, পরিত্যক্ত জমি ইত্যাদির তালিকা প্রণয়ন করে জমা দিতে মেয়র আতিক আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। পরের শনিবারের (৩ এপ্রিল) মধ্যে সব ডোবা, জলাশয়, পরিত্যক্ত জায়গা ইত্যাদির মালিকদের নিজ নিজ ডোবা, জলাশয়, পরিত্যক্ত জমি ইত্যাদি পরিষ্কারের জন্য চিঠি দেওয়ার জন্য মেয়র নির্দেশ দেন। যারা পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে এর পরের শনিবার (১০ এপ্রিল) থেকে গণহারে মামলা করারও তিনি নির্দেশ দেন।
আতিক বলেন, যার জায়গা তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি মালিকানাধীন যাই হোক না কেন সবার প্রতি এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। যার যার ডোবা তারা নিজেরা পরিষ্কার করবেন, অন্যথায় যেখানেই ময়লা পাওয়া যাবে, সেখানেই মামলা দেওয়া হবে।
মশক নিধন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশনাও দেন আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, অঞ্চলভিত্তিক মশক নিধন কর্মীদের জন্য তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়া মশার হটস্পট বের করার জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর, রোড ইন্সপেক্টর, সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, কীটতত্ত্ববিদ, সহকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দেন মেয়র।
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এপ্রিল মাস থেকেই জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য কাজ করা হবে বলেও আতিক জানান। এছাড়া ডোবা-নালা, জলাশয়ে মশার প্রজননরোধ করার জন্য ম্যালেরিয়া ওয়েল বি প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন মেয়র। একইসঙ্গে ওয়ার্ডের আয়তন এবং জনঘনত্ব অনুযায়ী মশক নিধন কর্মী পদায়নের নির্দেশ দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে, যে ওয়ার্ড সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন থাকবে এবং কম মশা পাওয়া যাবে সে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং তাঁর টিমকে আগামী ডিসেম্বর মাসে স্বর্ণ পদক দেওয়া হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর সাইদুর রহমান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়েদুর রহমান, বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান, আবদুল মতিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২১
এসএইচএস/এএটি