পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে নাজমুল হক (১০) নামে এক মাদরাসার ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাফেজ মো. রিপন (২১) নামে অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (২০ মার্চ) রাতে এ ঘটনায় পঞ্চগড় সদর থানায় ছাত্রের বাবা এজাহার দায়ের করে মামলা করেছেন।
আহত মাদরাসার ছাত্র নাজমুল হক পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় বড়কামাত গ্রামের জামাল উদ্দীনের ছেলে। সে মডেল বাজার ফোরকানিয়া নূরানী ও হাফেজিয়া মাদরাসার ছাত্র। অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মো. রিপন জামাদারপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র নাজমুল হককে মডেল বাজার ফোরকানিয়া নূরানী ও হাফেজিয়া মাদরাসায় ৩ মাস আগে ভর্তি করে দেয় তার বাবা-মা। সেখানে সে মেসে থাকতো। ১৫/২০ দিন আগে একই মাদরাসার এক ছাত্র নাজমুলের সঙ্গে মারামারি ও দুষ্টুমি করে। বিষয়টি দেখার জন্য এবং আর মারামারি যেন না করে নাজমুলের বাবা জামাল উদ্দীন মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মো. রিপনকে অবহিত করেন।
গত ১৪ মার্চ রাতে হাফেজ মো. রিপন নাজমুলকে শ্রেণিকক্ষে আটক করে বাঁশের বেত দিয়ে বেধরক মারধর করেন এবং বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান।
এরপর শুক্রবার (১৯ মার্চ) শিশুটির বাবা-মা শিশুটিকে মাদরাসায় দেখতে এলে শিশু ছাত্র নাজমুল আর মাদরাসায় থাকবে না বলে কান্নাকাটি করে। বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে নাজমুল আঘাতের চিহ্নগুলো বাবা-মাকে দেখায়। পরে নাজমুলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় শনিবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়।
খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে ছুটে আসেন পঞ্চগড় পুলিশ সুপার (এসপি) ইউসুফ আলী এবং শিশুটির খোঁজখবর নেন।
নাজমুলের বাবা জামাল উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, আমার ছেলেকে শিক্ষক হাফেজ মো. রিপন কোন কারণ ছাড়াই বেধরক মারধর করে মাদরাসায় ৬দিন ধরে আটকে রাখেন। আহত হলেও তাকে চিকিৎসা দেননি। পরে ছেলে কোন মতো আমার সঙ্গে দেখা করে সব বললে আমি তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমার ছেলেকে এমনভাবে মারধর করায় আমি তার বিচার চাই।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আক্কাছ আহম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় ওই শিশুর বাবা থানায় একটি এজাহার যুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত আসামিকে ধরতে আমাদের অভিযান চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২১
আরকেআর/এমআরএ