ব্রাহ্মণবাড়িয়া: কৃষি নির্ভর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলা বিজয়নগর। এখানকার অধিকাংশ মানুষের জীবিকার উৎস কৃষি জমি।
কৃষি পরিবারগুলোর অভিযোগ, সঠিক সময়ে ফসলি জমিতে ধান চাষ করতে না পারায় অন্তত দেড় হাজার মণ ধান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। জমিগুলো বর্গাচাষ করতে গিয়ে তাদের অনেককেই ঋণ নিতে হয়েছে।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জমির মালিক লিলু মিয়ার বাবা ইউনুছ মিয়া। লিখিত অভিযোগে মনিপুর গ্রামের প্রভাবশালী ১০ জনের নাম উল্লেখ করে সমস্যা নিরসনের দাবি জানানো হয়।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনিপুর গ্রামের আতকাপাড়ার বাসিন্দা ইউনুছ মিয়া একজন পেশায় একজন কৃষক। তার ছেলে লিলু মিয়া সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী। তিতাস নদীর উপর দিয়ে বিজয়নগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী সীমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের পাশের হাইখোলা মৌজায় ছয়টি বিএস দাগে ২৯৩ শতক ও ক্রয়সূত্রে দলিলমূলে আরও কিছু নাল জমির মালিক হন লিলু মিয়া। তিনি এসব জমি স্থানীয় কৃষকদের কাছে বর্গা দিয়ে রেখেছেন।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দেশে আসেন লিলু। পরবর্তীকালে আবারও আমিরাতে যান তিনি। কিন্তু দেশে থাকার সময় একই গ্রামের প্রভাবশালী হৃদয় আহমেদ জালালের সঙ্গে লিলুর কথা কাটাকাটি হয়। জালালের উস্কানিতে তার বংশের লোকজন লিলুর পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এসব ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা চলছে। এর জেরে লিলুর কৃষি জমিগুলোতে সেচের পানি দেওয়া বন্ধ করে দেন জালাল। এর ফলে জমিগুলোর বর্গাচাষিরা চলতি মৌসুমে ফসল ফলাতে পারেনি।
লিলু মিয়ার ফুফাতো ভাই ফারুক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, জালালের অনেকগুলো সেচের মেশিন থাকলেও আমার ফুফার জমিগুলোতে পানি দেয় নাই। ফলে জমিগুলো অনাবাদি রয়ে গেছে।
জয়নাল মিয়া নামে এক বর্গাচাষি বাংলানিউজকে বলেন, আমি লিলু মিয়ার কাছ থেকে সাত কানি জমি বর্গা নিয়েছি। কিন্তু জমিতে পানি না পাওয়ার ফলে চাষ করতে পারিনি। আমার অনেক টাকা লোকসান দিতে হবে।
তবে অভিযুক্ত হৃদয় আহমেদ জালালের ছেলে জাহিদ আহমেদ জয় বাংলানিউজকে বলেন, ওয়ার্ড মেম্বার সেলিম মিয়ার সঙ্গে লিলু মিয়ার ঝগড়া হয়। সেই ঘটনায় তারা আমাদের নামে একাধিক মামলা দিয়েছে। তবে তদন্তে কোনো মামলাই টিকেনি। আমরা সেচের পানি দিয়েছিলাম। তারা নিতে চায়নি। কেনো নেয়নি সেটা জানি না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রবিউল হক মজুমদার বলেন, সেচের পানি দিতে বাধা দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে.এম ইয়াসির আরাফাত বলেন, সেচের পানি না দেওয়ার অভিযোগটি পেয়েছি। জমিতে পানি দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২১
এনটি