ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শ্রীলঙ্কায় যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভোট

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১
শ্রীলঙ্কায় যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভোট

ঢাকা: শ্রীলঙ্কায় তামিলদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার ইস্যুতে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ ১১টি দেশ ভোট দিয়েছে।  

অন্য দেশগুলো হলো- পাকিস্তান, চীন, বলিভিয়া, কিউবা, ইরিত্রিয়া, ফিলিপাইন, রাশিয়া, ,ভেনিজুয়েলা, উজবেকিস্তান ও সোমালিয়া।

 

আর ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলো ভারতসহ ১৪টি দেশ। দেশগুলো হলো- ইন্দোনেশিয়া, জাপান, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, নামিবিয়া, নেপাল, সেনেগাল, সুদান, টোগো, বাহরাইন, বুর্কিনা ফাসো, ক্যামেরন ও গ্যাবন।  

এদিকে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ২২টি দেশ। অস্ট্রেলিয়া, বাহামা, ব্রাজিল, বুলগেরিয়া, আর্জেন্টিনা, আরমেনিয়া, কোস্টারিকা, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ফিজি, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, মালাবি, মার্শাল আইল্যান্ডস, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ডস, উত্তর আয়ারল্যান্ড, উরুগুয়ে, পোল্যান্ড, কোরিয়া, ইউক্রেন ও বৃটেন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।  

অনলাইন দ্য ডিপ্লোম্যাটে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন লিখেন দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ডিপ্লোম্যাট রিস্ক ইন্টেলিজেন্সের গবেষণা বিষয়ক পরিচালক অভিজনান রেজ। তিনি লিখেছেন, মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) শ্রীলঙ্কা ইস্যুতে ৪৭ সদস্যের জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে (ইউএনএইচসিআর) গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ২২টি সদস্য দেশ। তবে ‘প্রোমোটিং রিকনসিলিয়েশন, একাউন্টেবলিটি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ইন শ্রীলঙ্কা’ শীর্ষক ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান। ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলো ভারত। ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকা এই ভোটকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসের জন্য একটি এসিড টেস্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তার সরকার এই প্রস্তাব বা ভোটকে সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।

অভিজনান রেজ আরও লিখেছেন, এই প্রস্তাবে শ্রীলঙ্কায় তামিল সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। এতে শ্রীলঙ্কা সরকারকে গৃহযদ্ধের সময় ভয়াবহভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের আইন মারাত্মক আকারে লঙ্ঘনসহ সব যুদ্ধাপরাধের দ্রুত, পূর্ণাঙ্গ এবং পক্ষপাতিত্বহীন তদন্ত নিশ্চিত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত সব অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআইকে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীনেশ গুনাবর্ধনা সপ্তাহান্তে বলেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে তাকে পরাজিত করার চেষ্টা করছি। এক্ষেত্রে অনেক বন্ধুদেশ আমাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। আমরা আশা করি, এতে ভারতও আমাদেরকে সমর্থন করবে।

উল্লেখ্য, তামিলনাড়তে আগামী মাসেই রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু এক্ষেত্রে ভোটদানে বিরত থাকার মধ্য দিয়ে মতবিরোধকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে মোদি সরকার। মোদি সরকার আশা করছে, তারা একইসঙ্গে দেশের ভিতরে তামিলদের ক্ষোভকে ব্যবহার করবে এবং সেসঙ্গে ভূরাজনৈতিক খেলা চালিয়ে যাবে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে গোটাবাইয়া রাজাপাকসে ক্ষমতায় ফেরার পর মনে হচ্ছিলো ভারত-শ্রীলঙ্কার মধ্যে সম্পর্ক আগের অবস্থায় ফিরছে। কিন্তু সম্প্রতি যেসব জটিলতা তৈরি হয়েছে তাতে নয়া দিল্লির জন্য নতুন করে চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১
এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।