ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ঈশ্বরদী পৌর মেয়রের সহায়তা পেলেন মুন্নি ও তার ছেলে

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২১
ঈশ্বরদী পৌর মেয়রের সহায়তা পেলেন মুন্নি ও তার ছেলে ঈশ্বরদী পৌর মেয়রের সহায়তা পেলেন মুন্নি ও তার ছেলে। ছবি: বাংলানিউজ

পাবনা (ঈশ্বরদী): পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য উপার্জন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন ঈশ্বরদীর হতদরিদ্র নারী মুন্নি বেগম। মুন্নিকে স্বাবলম্বী করার জন্য তাকে নগদ অর্থ ও তার এক ছেলেকে একটি রিকশা কিনে দিলেন ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম অনলাইন নিউজপোর্টালে ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা হতদরিদ্র মুন্নির শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশের পরে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি সহযোগীতা করবেন। দায়িত্ব গ্রহণের পরই ঈশ্বরদী পৌরসভায় নব নির্বাচিত মেয়র হতদরিদ্র মুন্নি ও তার ছেলেকে সহযোগীতা করে তার কথা রেখেছেন।
  
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সন্ধায় ঈশ্বরদী পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র ইছাহক আলী মালিথা মুন্নির হাতে ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য নগদ পাঁচ হাজার টাকা এবং ৩৬ হাজার টাকা মুল্যের একটি অটোচার্জারযুক্ত রিকশা তুলে দিয়েছেন।

এসময় ঈশ্বরদী পৌরসভার ছয় জন দরিদ্র নারী-পুরুষের হাতে নগদ ৩০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।

পাবনার ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারাখালী মহল্লার পঞ্চাশোর্ধ বিধবা মুন্নি বাড়ির সামনে পিঠা বিক্রি করতেন। তার বড় ছেলে ভাড়ায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

স্বামী জামাল মারা যাওয়ার পর অভাব-অনটনে পড়েন তিনি। এলাকায় তিনি ‘মুন্নার মা’ হিসেবে পরিচিত।

মুন্নি বেগম অনুভূতি জানিয়ে বাংলানিউজকে জানান, মানুষের বাড়িতে কাজে যেতে পারি না। উনি তো (স্বামী মৃত জামাল) ঘরামির কাজ করতো। উনি অসুস্থ ছিল কয়েক বছর। লিভারের চিকিৎসার জন্য ৬০-৭০ হাজার টাকা শেষ। সহায়সম্বল বলতে কিছুই নাই আর। আমার চার ছেলে ও তিন মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেরা রিকশা চালিয়ে যা ইনকাম করে, তাতে চলে যায়। শীতের সময় বাড়িতে বসে পিঠা বিক্রি করতাম। ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র সাহেব ক্ষুদ্র ব্যাবসা করার জন্য নগদ পাঁচ হাজার টাকা এবং বড় ছেলেকে রিকশা কিনে দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, অসহায় পরিবারের দিকে নতুন মেয়র সুদৃষ্টি দিয়েছেন, আল্লাহর কাছে দোয়া করি,আল্লাহ্ যেন নতুন মেয়র সাহেবকে সুস্থ রাখেন, অসহায়দের পাশে থেকে তাদের সহযোগীতা করার তৌফিক দান করেন।

তার ছেলে মুন্না জানান, আমি ভাড়ায় রিকশা চালাতাম। প্রতিদিন যা আয় হতো তার থেকে ১৫০ টাকা রিকশার জমা দিতে হতো। নতুন মেয়র সাহেব একটা রিকশা কিনে দেওয়ায় আমার প্রতিদিন জমা খরচের ১৫০ টাকা আর লাগবে না। বাড়তি আয় দিয়ে সংসার ভালোভাবে চলবে। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়াসহ সংসারে আল্লাহর রহমতে ভালো থাকবো। আমার মত সাধারণ মানুষকে গুরুত্ব দিয়ে একটা রিকশা কিনে দিবেন। এটা আমি কখনো কল্পনা করতে পারিনি।

ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বাংলানিউজকে জানান, বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে পড়া সমাজের কিছু মানুষ আছে, যারা দরিদ্র। এই মানুষগুলো কারো কাছে চাইতেও পারে না, কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারে না। সেই মানুষগুলোর দিকে যদি একটু সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলে তাদের পথচলা কিছুটা হলেও সহজ হয়। আমি আমার দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করতে চাই। পৌরবাসী আমাকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছেন। পৌর এলাকার প্রত্যেক ওয়ার্ডের অভাবগ্রস্ত মানুষ, অসহায় মানুষকে সহযোগীতা করা আমার দায়িত্ব।

বাংলাদেশ: ০৭৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২১
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।