সিলেট: ড্রেন নির্মাণের অজুহাতে রাতের অন্ধকারে প্রায় অর্ধশত ছায়াবৃক্ষ কেটেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। পরে গাছগুলো টুকরো টুকরো করে এরই মধ্যে অধিকাংশ বিক্রিও করেছে তারা।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) পর্যন্ত গাছগুলো শ্রমিকরা কেটে নিতে দেখেছেন স্থানীয়রা। কেটে ফেলা গাছগুলো টুকরো টুকরো করে সড়কের পাশে রেখে এরপর সরিয়ে নেওয়া হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ একটি চক্র গাছ কেনাবেচায় লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করছে। এ ক্ষেত্রে বন বিভাগের অনুমতিও নেওয়া হয়নি।
খবর পেয়ে বন বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে তদন্ত যায়। সরেজমিন তারা দেখতে পান প্রধান সড়ক সংলগ্ন গাছগুলো কেটে ফেলার অনুমতির আবেদন করলেও একটি গলির সড়কের পাশের অর্ধশত গাছ কাটা হয়েছে।
বন বিভাগ সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যক্তিমালিকানা কিংবা সরকারি জমির গাছ হোক, কাটার আগে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হয়। তদন্তে গাছ কাটার কোনো যৌক্তিকতা মিললে দর নির্ধারণ সপেক্ষে পরবর্তীতে আরও গাছ লাগানোর শর্তে গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়। বিধি অনুযায়ী এ প্রক্রিয়া বন বিভাগের মাধ্যমে করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সিসিক সূত্র জানায়, ১৯৯০ সালের দিকে উপশহর প্রধান সড়কের দুই পাশে শতাধিক রেইনট্রি, মেহগণিসহ নানা প্রজাতির গাছগুলি লাগানো হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে ওই এলাকার সি ব্লকের ২১, ৩৭ ও ৩৮ নম্বর সড়কে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ কিলোমিটার এলাকায় ড্রেন নির্মাণ ও রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়। ড্রেন নির্মাণের জন্য গাছ কাটার আবেদন করা হয়েছিল।
তবে বন বিভাগ সূত্র জানায়, ড্রেন নির্মাণের লক্ষে কিছু গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে চিঠি দিলেও অনুমতি পাওয়ার আগেই রাতের আধারে সেসব গাছ কেটে বিক্রি করেছে সিটি কর্পোরেশন।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. তৌফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে সিটি করপোরেশন আবেদন করে। মাঠ পর্যায়ে খতিয়ে দেখতে আমরা লোকজন পাঠাই। কিন্তু দেখা গেছে, প্রধান সড়ক ছাড়াও ভেতরের সড়কেও গাছ কাটা হয়েছে। এর মধ্যে গলির একটি সড়ক থেকেই মোট ৩১টি গাছ কাটা হয়েছে।
সিলেট সিটি করেপোরেশনের ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালেহ আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, উপশহরের ১৪ নং সড়ক থেকে ২০/২৫টি গাছ কাটা হয়েছে। এরমধ্যে কিছু গাছ মরা ছিল। তবে প্রধান সড়কের পাশের গাছ কাটতে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। মূলত; ওই সড়কে মরা কিছু গাছ কাটা হয়েছে দাবি করেন তিনি। আর কিছু গাছ কাটার বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে তিনি দোষারপ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২১
এনইউ/এমএমজেড