ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অবস্থান তৈরির জন্য উসকানিমূলক পোস্ট দিত সৈকত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২১
অবস্থান তৈরির জন্য উসকানিমূলক পোস্ট দিত সৈকত ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রংপুরের পীরগঞ্জের সাম্প্রদায়িক হামলার উসকানিদাতা ও হামলায় সরাসরি অংশ নিয়েছিল গ্রেফতার হওয়া সৈকত মন্ডল। এছাড়াও সৈকতের নির্দেশেই মাইকিংয়ের মাধ্যমে লোক জড়ো করেছিলো মসজিদের মোয়াজ্জেম রবিউল।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এর আগে, শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাতে টঙ্গী এলাকা থেকে সৈকত মন্ডল (২৪) ও তার সহযোগী রবিউল ইসলামকে (৩৬) গ্রেফতার করে র‌্যাব-১৩।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সৈকত রংপুরের একটি ডিগ্রি কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী। তিনি একটি ফেসবুক পেইজের এডমিন। ওই পেইজে তার ৩ হাজার ফলোয়ার রয়েছে। সে প্রথমে ওই পেইজে ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে লোক জড়ো করে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। সৈকত নিজেকে একটি অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ফেসবুকে ধর্মীয়, সরকার ও রাষ্ট্র বিরোধী বিভিন্ন উসকানিমূলক পোস্ট দিতেন।

তিনি বলেন, সৈকত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে এসব তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছেন। তার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন হামলায় সরাসরি অংশ নিয়ে বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। গ্রেফতার হওয়া রবিউল ঘটনাস্থলের পাশে একটি মসজিদের মোয়াজ্জেন ছিলেন। সৈকতের নির্দেশেই রবিউল মাইকিং করে লোকজন জড়ো করেছিল। এরপর উঁচু একটি স্থানে দাঁড়িয়ে সৈকত হামলা ও অগ্নিসংযোগের জন্য সবাইকে নির্দেশনা দেয়। ঘটনার পরপর সৈকত ও রবিউল  দু‘জনই আত্মগোপনে চলে যান।

ইতিপূর্বে গ্রেফতার হওয়া আসামি উজ্জলের প্রসঙ্গে খন্দকার আল মাঈন বলেন, উজ্জল ছিল সৈকতের ফেসবুক ফ্রেন্ড। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া উজ্জল ও পরিতশের নিজস্ব দ্বন্দ্বের মাধ্যমেই হামলাটি শুরু হয়। উস্কানিমূলক স্ট্যাটাসে একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। সৈকত এর আগেও ফেসবুকে বিভিন্ন ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দিয়েছেন।

স্থানীয়রা বলছেন সৈকত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এমন কোনো তথ্য র‌্যাব পেয়েছেন কি না? জানতে চাইলে খন্দকার আল মঈন বলন, সৈকতের কোনো রাজনৈতিক দলের পরিচয় পাওয়া যায় নি। সৈকত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী  হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। স্থানীয়ভাবে তিনি নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে প্রচার করতে পারে, কিন্তু এ সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ তিনি আমাদের দিতে পারে নি। তার ফেসবুকেও মিথ্যা তথ্য আমার পেয়েছি। তিনি একটি কলেজের শিক্ষার্থী হলেও অন্য একটি কলেজের ছাত্রনেতা হিসেবে তথ্য দিয়েছেন।

কুমিল্লার ঘটনার পর থেকে সৈকত নিয়মিত তার ফেসবুক পেইজে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে যাচ্ছিলেন। গ্রেফতার সৈকত ও রবিউলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্টকে কেন্দ্র করে রংপুরের পীরগঞ্জের বগ করিমপুর গ্রামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানায় ৩টি মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে উজ্জল ও পরিতশসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১৩।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২১
এসজেএ/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।