ঢাকা: ভাগ্য বদলাতে জমিজমা বিক্রি ও ঋণ করে দুবাই যান রানা আহমেদ বাকি (৩৪)। কাগজপত্র ঠিক না থাকায় ২৩ দিন জেল খেটে ফিরে আসেন দেশে।
এরপর রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও ঋণের ৩-৪ লাখ টাকা শোধ করতে পারেননি। ঋণের টাকা শোধ করতেই সাড়ে তিন বছরের শিশুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেন তিনি।
গত ২১ অক্টোবর দুপুরে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন পল্লিবিদ্যুৎ এলাকা থেকে সাড়ে ৩ বছরের শিশু আফিয়া অপহৃত হয়। ঘটনার দিনই অপহরকারী ফোনে শিশুটির পরিবারের কাছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অন্যথায় শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৪ তদন্তের ধারাবাহিকতায় পাবনা, নাটোর এবং সবশেষে রোববার (২৪ অক্টোবর) সকালে সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর থানায় দুর্গম চরাঞ্চল থেকে অপহৃত শিশু আফিয়াকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী মো. রানা আহমেদ বাকিকে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
গ্রেফতারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, অপহরণকারী রানা বিগত ২ বছর ধরে আশুলিয়ার পল্লিবিদ্যুৎ কবরস্থান রোড এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। রিকশাচালক রানা বেশির ভাগ সময় রাতে রিকশা চালাতেন ও দিনে বাসায় থাকতেন। বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় তিনি ভুয়া পরিচয় ও ঠিকানা ব্যবহার করেন।
ভিকটিম শিশুটির বাবা-মা দুজনই গার্মেন্টসে চাকরির কারণে সে নানির বাসায় থাকতো। আর এই নানির পাশের রুমেই অপহরণকারী রানা ভাড়া থাকতেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রানা শিশু আফিয়াকে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন শিশুখাদ্য চকলেট, চিপস ও খেলনা কিনে দিয়ে সখ্য গড়ে তোলে। এই সুযোগে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তিনি শিশুটিকে অপহরণ করে বন্ধুর বাড়ি সিরাজগঞ্জে গিয়ে অবস্থান করেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, অপহরণকারী রানা ২০০৯ সালে জমিজমা বিক্রি ও ঋণ করে দুবাই যান। কিন্তু সঠিক কাগজপত্র না থাকায় ২৩ দিন জেল খেটে দেশে ফেরত আসেন। দেশে ফিরে তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। ঋণের ৩-৪ লাখ টাকা পরিশোধের জন্যই তিনি এই অপহরণের পরিকল্পনা করে বলে স্বীকার করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২১
পিএম/এমজেএফ