মানিকগঞ্জ: পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া ‘আমানত শাহ’ ফেরির মূল্য ৫ কোটি টাকা। পানির নিচে ডুবে থাকা এ ফেরির উত্তোলন করতে ব্যয় হবে প্রায় ২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) থেকে জানা যায়, ডেনমার্ক থেকে ১৯৮০ সালে প্রায় ৫ কোটি টাকা দিয়ে এই আমানত শাহ ক্রয় করে। এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন নৌরুটে চলেছে এই রো রো ফেরি ‘আমানত শাহ’। তবে ফেরিটির বয়স ৩০ হয়ে যাওয়ার পর দুই দফায় সার্ভের মাধ্যমে ১০ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ফিটনেস দেয় কর্তৃপক্ষ। নৌযানের তালিকা অনুযায়ী ৩৩৫ জন যাত্রী এবং ২৫টি যানবাহন বহন করার ক্ষমতা রয়েছে ফেরিটির। এর মোট ওজন ৮০৬.৬০ টন। তবে সর্বোচ্চ ১০.২৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলার সক্ষমতা থাকলেও ফেরিটির ছিল না ফিটনেস।
জানা যায়, গত ২৭ অক্টোবর আনুমানিক সকাল পৌনে ১০টার দিকে ১৪টি পণ্য বোঝাই ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান নিয়ে ডানে কাত হয়ে একাংশ তলিয়ে যায় পদ্মানদীতে। ডুবে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে বিআইডব্লিউটি’র উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা’ উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। পরে নারায়নগঞ্জ থেকে ‘প্রত্যয়’ নামে আরও একটি জাহাজ আসার কথা থাকলেও আসতে না পারায় শিমুলিয়া থেকে ‘রুস্তম’ নামে আরো একটি জাহাজ আসে। কিন্তু এই জাহাজগুলোর ফেরি তোলার কোনো ক্ষমতা না থাকায় বিআইডব্লিউটিএ জেনুইন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে প্রায় দুই কোটির টাকার বিষয়ে মৌখিক আলাপ-আলোচনা শেষ করে। সংস্থাটি প্রাথমিকভাবে দুই কোটি টাকা এ কাজের জন্য বরাদ্দ চায়। তবে বিআইডাব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে জানানো হয় কাজ শেষে তাদের সব হিসাব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
বিআইডাব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত পরিচালক (মেরিন) মো. আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি ফেরি একই নিয়মে চলে আর এই ফেরির মেয়াদ ছিলো ৩০ বছর। কিন্তু পরে সার্ভে করিয়ে আরো দুই বার মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে এতো টাকা ব্যয় করে কেন এই মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরিটি তোলা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এই বিষয়টা বিআইডব্লিউটিসির বিষয় তারা এইটা ভালো বলতে পারবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান রাংলানিউজকে বলেন, ডুবে যাওয়া ফেরি আমানত শাহর তলার কার্যক্ষমতা (টেমপার) এখনো ৮.০ এর একটু বেশি রয়েছে যা স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি। তবে এই ডুবে যাওয়া ফেরির বেশ ক্ষতি হয়েছে এই ক্ষতি ডগে নিয়ে কাজ করালে পুনরায় ফেরিটি আগের মতো চলতে পারবে।
এই মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরিটি স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করলে সরকার বেশি লাভবান হতো কী না এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২১
এনটি