ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

স্বাধীনতার সচিত্র ইতিহাস দেখতে ভিড়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২১
স্বাধীনতার সচিত্র ইতিহাস দেখতে ভিড়

ঢাকা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান (রেসকোর্স ময়দান)। শব্দটি শুনলেই বাঙালির মনে ভেসে ওঠে লাখো জনতার সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আঙ্গুল উচানো বক্তব্যের ছবি।

কিংবা বেজে ওঠে ৭ই মার্চের সেই দারাজ কণ্ঠে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।

আর এই উদ্যানে রয়েছে দেশ ও স্বাধীনতার সচিত্র ইতিহাস। দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ ‘স্বাধীনতা জাদুঘর’ এ এসব সচিত্র ইতিহাস রয়েছে।

বিজয়ের ৫০ তম বার্ষিকীতে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) দেশ ও স্বাধীনতার এসব সচিত্র ইতিহাস দেখতে নগরবাসী পরিবার পরিজন নিয়ে ভিড় করেছে।

ভূগর্ভস্থ এই জাদুঘরে ১৪৪টি কাচের প্যানেলে ৩০০টির মতো ঐতিহাসিক আলোকচিত্র প্রদর্শিত রয়েছে। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬’র ৬ দফা, ৭০’র নির্বাচন এবং ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র,আত্মসমর্পণের দলিল, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশি বিদেশী সংবাদপত্রের প্রতিবেদন, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীদের নির্যাতনের প্রতিবেদন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা ৩১ মিনিটে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে যে টেবিলের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার লে.জেনারেল আমীর আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী আত্মসমর্পণের দলিলের সই করেছেন সেই টেবিলের একটি রেপ্লিকা ইত্যাদি।

রয়েছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের আনন্দের ছবি, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ছবি, ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন ছবি।

জাদুঘরের মধ্যখানে রয়েছে একটি ফোয়ারা।

প্রথমে রয়েছে দেশভাগ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনার ছবি সহ বর্ণনা। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের বিশাল আকৃতির এটি ছবি রয়েছে।

খুব মনোযোগ দিয়ে ছবিটি দেখছেন ওয়ারী থেকে আসা ষাটোর্ধ আউয়াল পাঠান।

তিনি জানান, এটা দেখে বার বার আবেগে আপ্লুত হই। এখানে শেখ সাহেবের দেওয়া ভাষণটাই আসল। এই ভাষণ কখনো পুরোনো হবে না। আজীবন সবাই শুনবে। এ ভাষণই মুল প্রেরণা ছিলো।  

একে একে ছবিগুলো দেখছেন দর্শনার্থীরা। অনেকে ছবিগুলোর সঙ্গে নিজেদের মোবাইল ফোনে ক্যামেরাবন্দি রাখছেন।

স্ত্রীসহ ৫ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড্ডা থেকে জাদুঘরটি দেখতে এসেছেন রবিউল ইসলাম।

স্বাধীনতা যুদ্ধের এসব ছবি দেখে তিনি বলেন, একনজরে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস দেখলাম। অনেক কিছু জানলাম। সবাই একবার করে এখানে আসা উচিত। এই ধরেন জেনারেল নিয়াজীর আত্মসমর্পণের সেই ঐতিহাসিক ছবিটা দেখলাম। ৫০ বছর আগের এই ছবিটাই আমাদের নয় মাস যুদ্ধের পূর্ণতা দিলো।

এই ছবির সামনেই রয়েছে কাচের ঘরে একটি টেবিল।

এ টেবিলের বর্ণনায় বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা ৩১ মিনিটে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) যে টেবিলের উপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার লে.জেনারেল আমীর আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী আত্মসমর্পণের দলিলের স্বাক্ষর করেন এটি তার অনুকৃতি। মূল টেবিলটি জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে।

রয়েছে মুক্তিবাহিনীর সেক্টর কমান্ডারদের ছবি, মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি, চিফ অব স্টাফ, ডেপুটি চিফ অব স্টাফের ছবি।

কামরাঙ্গীচর থেকে আসা মাদ্রাসা ছাত্র খায়রুল আলম জায়েদ বলেন, অনেক সুন্দর সচিত্র একটি স্বাধীনতার জাদুঘর। এটা সম্পর্কে আগে জানতাম না। এখন এসে দেখলাম এক নজরে দেশ ও স্বাধীনতার ইতিহাস। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এটার প্রচারণার দরকার। তাহলে ভবিষ্যত নাগরিকরা স্বাধীনতার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে।   

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২১
ইএস/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।