ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার গারো ২ কিশোরী 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২২
বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার গারো ২ কিশোরী 

ময়মনসিংহ: একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে রিয়াদ নামে এক যুবকের নেতৃত্বে একদল বখাটে গারো দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  

ঘটনাটি ঘটেছে গারো পাহাড়ের সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার একটি গ্রামে।

 

এদিকে ঘটনার সাতদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত ধর্ষকদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে ভুক্তভোগীদের পরিবারসহ স্থানীয়দের মধ‍্যে।  

তবে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান বলেছেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ও তাদের পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তবুও আসামিদের গ্রেফতারে সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। আশা করছি, এ ঘটনায় করা মামলার আসামিদের খুব দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।  

ওসি আরও জানান, ধর্ষকরা মেয়ে দুটিকে ধর্ষণের পর বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেন। কিন্তু ভয় উপেক্ষা করে নির্যাতনের শিকার দুই কিশোরী ঘটনাটি তাদের পরিবারকে জানালে তারাও হতবিহ্বল হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি প্রথমে চেপে যায়। পরে নির্যাতিত ওই কিশোরী বিষয়টি মানতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।  

বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় থানা-পুলিশ ঘটনার অনুসন্ধানে কিশোরীদের বাড়িতে যায়। পরে ভুক্তভোগী কিশোরীদের একজনের বাবা বাদী হয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর হালুয়াঘাট থানায় একটি মামলা করেন।  

ওই মামলায় স্থানীয় হালুয়াঘাটের গাজিরভিটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য কচুয়াকুড়া গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে সোলায়মান হোসেন রিয়াদকে (২২) প্রধান করে ১০ জনকে আসামি করা হয়।  

এ মামলার অন‍্য আসামিরা হলেন- কচুয়াকুড়া গ্রামের শরিফ (২০), এজাহার হোসেন (২০), কাটাবাড়ি গ্রামের রমজান আলী (২১), কাউছার (২১) আছাদুল (১৯), শরিফুল ইসলাম (২২), মিজান (২২), রুকন (২১) ও মামুন (২০)।  

আসামিরা সবাই এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত বলে পুলিশ জানিয়েছে।  

এদিকে সোমবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় গাজিরভিটা ইউনিয়নের কাজলের মোড় বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে স্থানীয় কয়েকটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। এতে কয়েক শত নারী-পুরুষ ও ছাত্র-ছাত্রী অংশ নেন।  

এ সময় তারা অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানান।  

মানববন্ধনে বাংলাদেশ গারো আদিবাসী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মি. তুরষ দাংগ বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিরা গ্রেফতার না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিতে বাধ‍্য হবো।  

ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় গাজিরভিটা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন।   

তিনি জানান, গত এক বছর আগেও এক গারো নারীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় সালিশ করে বিচার করে সতর্ক করা হয়েছিল ওই বখাটে চক্রটিকে। কিন্তু সতর্ক করেও এদের থামানো যায়নি। এ দলের নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় রিয়াদ নামে এক যুবক।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।