ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শিবগঞ্জে মাদক ও কোটি টাকাসহ আটক ৫

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২২
শিবগঞ্জে মাদক ও কোটি টাকাসহ আটক ৫ প্রতীকী ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচ মাদকসেবীকে মাদকসহ আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ সময় তাদের কাছ থেকে কোটি টাকার ডেবিট কার্ড ও নগদ টাকাও জব্দ করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৭ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় র‍্যাব-৫।

এর আগে বৃহস্পতিবার (০৬ জানুয়ারি) বিকেলে ও রাতে শিবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করে র‍্যাব-৫, সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল।  

র‌্যাব আরও জানায়, ১২ বছর আগের মাদক মামলা, সন্তানের ভ্রুণ হত্যা ও নারী নির্যাতনের একাধিক মামলার পলাতক আসামি আপেলকে শিবগঞ্জ থেকে আটক করে র‍্যাব। এ সময় মাদক সরবরাহকারী আসিফ আলী নিশান ও আপেলের আমেরিকা প্রবাসী ভাইয়ের ছেলে মাদকসেবী সাদমান শাকিব আলীকেও আটক করে র‍্যাব। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে, শিবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে শুক্রবার সকালে আরও চার মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও জাল টাকা জব্দ করা হয়।  

আটকরা হলেন- শিবগঞ্জ উপজেলার জালমাছমারী এলাকার মৃত আবেদ আলীর ছেলে মো. আজহার আলী আপেল (৪১), আতাহার আলীর ছেলে ও আপেলের ভাতিজা সাদমান শাকিব আলী (২০), দৌলতপুর উপরটোলা গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে আসিফ আলী নিশান (২৬), উজিরপুর ডাকাতপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মো. জাহির (৩৫), সেলিমাবাগ গ্রামের মৃত ধনা মমিনের ছেলে রানাউল হক (৩১), দৌলতপুর মহাজনপাড়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানা ইয়াসিন (৪২), তার ছেলে শাহরিয়ার নাজিম জয় (২২)।  

র‍্যাব জানায়, সাবেক শিক্ষকের ছেলে আপেলের কাছ থেকে চারটি বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। এই চার কার্ডে আনুমানিক ৫ কোটি টাকা রয়েছে বলে র‍্যাবকে জানিয়েছে আপেল।

র‍্যাব-৫, সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর সানারিয়া চৌধুরী আরও বলেন, ২০১৭ সালে আপেল হিরোইনে আসক্ত হয়ে পড়েন। পরে ২০১৮ ঢাকায় একটি পুর্নবাসন কেন্দ্রে ভর্তি করা হলেও সেখান থেকে পালিয়ে যান। ২০১৯ সালে তাজনুভা তাজরিন অভিকে বিয়ে করেন। বিয়ের দুই মাসের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন অভি। এছাড়াও ২০১০ সালের একটি মাদক মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি আপেল।  

মেজর সানারিয়া জানান, আপেল বর্তমানে পুরোপুরি মাদকাসক্ত। প্রতিমাসে তার মাদকের পেছনে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়। এমনকি তার একাধিক গার্লফ্রেন্ড রয়েছে। যাদের নিয়ে তিনি টিকটক ভিডিও করেন। মাদক ব্যবসায়ী আসিফ আলী নিশান তার মাদকের সরবরাহ করতেন। আপেল তার ভাতিজা আমেরিকা প্রবাসীর ছেলে সাদমান শাকিব আলীকে নিয়ে মাদক সেবন করতেন ও প্রতিদিন তার বাসায় আসর বসাতেন। সাদমান শাকিবের মা সুবর্না খাতুন এয়ার হোস্টেস ছিলেন এবং বিমানে স্বর্ণ পাচারের সময় পুলিশ তাকে আটক করে। গত কয়েক বছর ধরে সুবর্না জেলে রয়েছেন।

এদিকে খবর পেয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়া আপেলের সাবেক স্ত্রী তাসনুভা তাজরিন অভি বলেন, তাকে (আপেল) বিয়ে করে অনেক বড় ভুল করেছি। তিনি আমার সব গহনা বিক্রি করে মাদক সেবন করতেন। আমাকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এমনকি আমার পেটে থাকা সন্তানকেও হত্যা করেছে। আমি এর ন্যায্য বিচার চাই।  

র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা মাদক ব্যবসা ও সেবনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় র‍্যাব।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২২
এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।