ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শপথ নেয়ার আগেই মেম্বার পেলেন কম্বলের স্লিপ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২২
শপথ নেয়ার আগেই মেম্বার পেলেন কম্বলের স্লিপ!

নীলফামারী: শপথ নেওয়ার আগে কম্বলের স্লিপ পেয়েছেন নব-নির্বাচিত ইউপি সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নে।

এতে বর্তমান চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে।  

সূত্র জানায়, শপথ নেওয়ার আগেই নবনির্বাচিত মেম্বারদের দিয়ে কম্বল বিতরণ করলো ইউপি সচিব। বিধি অনুযায়ী গেজেট না হওয়া পর্যন্ত রানিং চেয়ারম্যান মেম্বাররাই সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন। নতুন পরিষদ গঠন ও দায়িত্ব গ্রহনের পরই নবনির্বাচিতরা নিয়মিত কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন। বিশেষ করে সরকারি কর্মকাণ্ডে এর আগে কোনভাবেই তারা সম্পৃক্ত হতে পারবেন না।  

এই নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজস্ব ক্ষমতাবলেই একাজ করেছেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের সচিব মো. মোখছেদুল ইসলাম। তিনি ৩৭০ পিসের মধ্যে নতুন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বারকে ১০ পিস, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বারকে ১০ পিস কম্বলসহ নতুন ১২ জনকেই স্লিপ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মুরসালিনের সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, সচিব মোখছেদুল চৌকিদার সাইফুলের মাধ্যমে ১০টি কম্বলের স্লিপ বাড়িতে পাঠিয়ে ছিলেন। সেগুলো বিতরণও করেছি। শপথ নেওয়ার আগে কি এভাবে সরকারি ত্রাণ নিতে পারেন? 

এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জানিনা। তবে এমন নিয়ম না থাকলে সচিব কিভাবে দিলেন তা সেই জানেন।

বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লোকমান বলেন, এখনও আমরা পুরাতনরাই দায়িত্বে আছি। নতুনরা এখনও শপথ বা দায়িত্ব নেয়নি। এতে তারা কোনভাবেই বিতরণ, বিভাজন তথা কোনো প্রকার কার্যক্রমেই অংশ নিতে পারবেন না। অথচ ইউপি সচিব মোখছেদুল ইসলাম ঊর্ধ্বতন প্রশাসন ও আমাকে না জানিয়েই তাদের কম্বল দিয়েছেন। তিনি কোনো ক্ষমতাবলে এমন বেআইনি কাজ করেছেন তা সেই ভালো জানেন। আমাকে উপেক্ষা করে তিনি নিজের পছন্দের লোকজনকেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্লিপ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ইউপি সচিব মোখছেদুল ইসলাম প্রথমে নবনির্বাচিতদের কম্বলের স্লিপ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। পরে প্রমাণ উপাস্থাপন করলে তিনি বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবেই কম্বলের স্লিপ বিতরণ করা হয়েছে। পুরাতনদেরই মূলত বেশি দিয়েছি। নতুন ৪-৫ জনকে সম্মান করে কিছু দেওয়া হয়েছে। এতে নিয়মের কোনো ব্যত্যয় তো দেখিনা। ইচ্ছেমত নিজের লোকজনকে স্লিপ দিয়েছেন এমন অভিযোগ বিষয়ে তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন, আত্মীয় স্বজন গরীব থাকলে কি তাদের দিতে পারবোনা? ইউএনও'র স্যারের সঙ্গে পরামর্শ করেই সব করা হয়েছে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম হুসাইন বাংলানিউজকে বলেন, পুরাতনদের মাধ্যমেই কম্বল বিতরণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও ইউপি সচিব নবনির্বাচিতদের দিয়ে থাকলে সে ব্যাপারে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।