গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনা নয়, পারিবারিক কলহের জের ধরে ছেলে সোহান মৃধার (২২) হাতে খুন হন হোটেল ব্যবসায়ী আজিজার রহমান মৃধা (৪৫)।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ।
পুলিশ সুপার আলিফ জানান, নিহত আজিজার রহমানের সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রীর ছেলে সোহানের পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে ১১ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে ছেলে সোহান কৌশলে তার বাবাকে ডেকে পুরাতন বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার বাবা আজিজার রহমানের মাথায় স্টিলের পাইপ দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।
হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য ছোট ভাই ফারুক মৃধাকে (১৫) সঙ্গে নিয়ে মরদেহ উপজেলার আশামনি হোটেলের সামনে রাস্তার উপর ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বলে জানান তিনি।
এর আগে, গত ১২ জানুয়ারি সকালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বকচর এলাকা থেকে হোটেল ব্যবসায়ী আজিজার রহমান মৃধার (৪৫) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আজিজার রহমান পৌর শহরের বকচর এলাকার বাসিন্দা। তিনি বাড়ির সামনে হোটেলের ব্যবসা করতেন।
হোটেল থেকে একটু দূরে আজিজার রহমানের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা খবর দিলে মরহেদটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এসময় পরিবারের পক্ষ থেকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করা হলেও প্রাথমিকভাবে এটি সড়ক দুর্ঘটনা বলে ধারণা করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ১৩ জানুয়ারি নিহত আজিজারের দ্বিতীয় স্ত্রী মেনেকা বেগম (৩৮) বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। ১৪ জানুয়ারি পিবিআই গাইবান্ধা তদন্তের দায়িত্ব পান। পরদিন ১৪ জানুয়ারি গোবিন্দগঞ্জের বকচর গ্রাম থেকে অভিযুক্ত সোহান মৃধাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে সোহান পারিবারিক কলহের জেরে বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এছাড়া ১৫ জানুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে গাইবান্ধা বাসস্ট্যান্ড থেকে সোহান মৃধার মা নিহতের প্রথম স্ত্রী সোহাগী বেগমকে গ্রেফতার করে পিবিআই। একই দিন বিকেল ৫টার দিকে নিজের বকচর গ্রাম থেকে সোহান মৃধার ছোট ভাই ও নিহত আজিজারের ছেলে মো. ফারুক মৃধাকে (১৫) গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় পিবিআই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
এনটি