ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

কানসাট পল্লী বিদ্যুৎ সদর দপ্তরে হামলায় মামলা 

৯ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি

এ কে এস রোকন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২
৯ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি। ২০১৩ সালের এ দিনে কানসাটস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দপ্তরটিতে নাশকতা চালায় জামায়াত-শিবির কর্মীরা।

এ সময় অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় শত শত কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ।  মারা যান গণপূর্ত বিভাগের এক প্রকৌশলী। এছাড়াও পর্যটন মোটেলসহ বহু স্থাপনায় নাশকতা চালানো হয়।  
এ ঘটনার  ৯ বছর ধরে চলছে মামলার বিচারিক কার্যক্রম। কিন্তু এখনও মামলাগুলোর সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।

এক সময় শিবগঞ্জের কানসাটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তর ছিল এটি। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তৎকালীন  চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত এনামুল হক শিবগঞ্জ উপজেলার স্থায়ী অধিবাসী হওয়ার সুবাদে তিনি কানসাট এলাকায় জেলার সদর দপ্তরটি নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু বিদ্যুৎ আন্দোলনের একদফা আন্দোলনে সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর আবারো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয় এই পল্লী বিদ্যুৎ সদর দপ্তরটি। পরে নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে সদর দপ্তরটি স্থানান্তরিত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরে। একই সময় সোনামসজিদ স্থলবন্দর এলাকায় নির্মিত পর্যটন মোটেল টিও উদ্বোধনের মাত্র তিন দিন আগে পুড়ে যায়। সেদিনের আকস্মিক হামলায়  সেখানে কর্মরত গণপূর্ত বিভাগের এক প্রকৌশলী আতঙ্কিত হয়ে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।  

সেদিন তাদের তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি জেলা শহরের রেহাইচরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন স্থান।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রমতে, যুদ্ধাপরাধী প্রমাণিত হওয়া দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায়ে ওই দিন কানসাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরে ভাঙচুর, পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহের প্ল্যান্টসহ ট্রান্সফরমার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক লুটপাট ও ধ্বংসলীলা চালায় জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এতে প্রায় ৪’শ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস হয়।  

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, এই ভয়াবহ হামলা এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তৎকালীন এজিএম রেজাউল করিম বাদি হয়ে তিনটি মামলা দায়ের করেন। ৯ বছর ধরে এ মামলা চলমান রয়েছে। বাদিপক্ষের  ৪জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আদালতে সাক্ষি উপস্থাপন করেছেন। তিনি আরো জানান, ৪’শ কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস করেছে, এটি রাষ্ট্রের অপূরনীয় ক্ষতি। এখনো ধকল কাটিয়ে পুরোপুরি এ দপ্তরটি পূনর্গঠন করার  সামর্থ এখনো অর্জন করতে পারেনি। আর ৪ মাস বিদ্যুৎ না থাকায় সেচের অভাবে নষ্ট হয়ে যায় অন্তত ১২শ’ হেক্টর জমির ফসল।  বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন ৫৫ হাজার গ্রাহক।

 চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বোর্ডের সাধারণ সম্পপাদক রাজু বিশ্বাস জানান, যারা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়েছিল বিচারের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত হলে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করতে আর কেউ সাহস পাবে না।  

অপরদিকের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি আঞ্জুমান আরা বলেন, পল্লি বিদ্যুৎ পোড়ানোর ঘটনায় সাক্ষ্য গ্রহণ  চলছে। এ পর্যন্ত ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে শুরু হবে এ মামলার শুনানি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।