চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ইচ্ছামতো নিজের গাছও কাটা যাবে না- এমন আইন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত হয় চলতি বছরের ৭ মার্চ। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে মানতে হবে কিছু নিয়ম।
কিন্তু সব নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভোলাহাট উপজেলার দলদলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দু’টি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। অফিস চত্বরের জীবিত মেহগনি গাছ দু’টির দাম লাখ টাকার ওপরে। গাছ দু’টি সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কেটে সরিয়ে ফেলার অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, গাছ দু’টি কেটে ৫৬ কিলোমিটার দূরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের একটি স’মিলে পাচার করারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ অভিযোগের আংশিক স্বীকার করেছেন তিনি।
ওই অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিসের সামনে দু’টি মেহগনি গাছ শুক্রবার কেটেই সরিয়ে ফেলার পর মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট করে ফেলা হয়।
স্থানীয়রা জানান, দলদলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পিয়ন মো. নাসিরের কাছে গাছ কাটার কারণ জানতে চাইলে তিনি অফিসের আসবাবপত্র বানানোর জন্য গাছগুলো কাটছেন বলে জানান। গাছগুলো কেটে নেওয়ার পর গর্ত হওয়া স্থানে মাটি ভরাট করে দেন তিনি। এরপর রাতারাতি ট্রলিতে কাঠ বোঝাই করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে নাসিরের বাড়ির কাছের এক স’মিলে পৌঁছে দেন দলদলী গ্রামের ট্রলিচালক মো. উজির।
এদিকে গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত দলদলী গ্রামের লাট্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব ছোট খাট বিষয় নিয়ে কিছু না করার অনুরোধ জানান।
আর ট্রলিচালক মো. উজির বলেন, কাঠ বোঝাই ট্রলির ভাড়া হয়েছিল আড়াই হাজার টাকা। এর মধ্যে দুই হাজার টাকা পরিশোধ করেন ভূমি অফিসের মো. নাসির। বাকি টাকা পরে দেবেন বলে জানান। গাছের মোটা অংশ বিশ্বরোড স’মিলে রেখে বাকিগুলো নাসিরের বাড়িতে রেখে আসেন।
এ ব্যাপারে নাসিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে গাছ কাটার কথা অস্বীকার করেন। পরে এ প্রতিবেদকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
এরপর তাকে এ নিয়ে বিভিন্ন সূত্র উল্লেখ করা হলে তিনি জানান, পতাকার স্ট্যান্ডটিতে পতাকা ওড়াতে সমস্যা হওয়ায় একটি চিকন গাছ অফিসের অনুমতি নিয়ে কাটা হয়েছে। আগে স্যারকে বলে গাছ কেটেছি। কিছু বলার থাকলে ইউএনও স্যারকে বলেন।
অপরদিকে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, গাছ কাটার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।
তবে মাটি ভরাট করা স্থানে দু’টি গাছ না থাকার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন।
তিনি গাছ কাটার সঙ্গে কে জড়িত, তা না বললেও তার দাবি, তাকে না জানিয়ে ছুটির দিন গাছ কেটে নিয়ে গেছে কেউ। আর এ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভোলাহাটের ইউএনও মো. মিজানুর রহমানের (অঃচাঃ) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। তবে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২
এসআই