ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ঢামেকে রংপুরের জোড়া শিশু, রিপোর্ট দেখে সিদ্ধান্ত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২২
ঢামেকে রংপুরের জোড়া শিশু, রিপোর্ট দেখে সিদ্ধান্ত

ঢাকা: রংপুর পীরগাছা মাহিগঞ্জ বড় দোরগা গ্রামের হতদরিদ্র সংসারের গৃহবধূ হামিলা বেগম গত দুই মাস আগে যমজ জোড়া শিশু জন্ম দেন। ভ্যান চালক আবদুল খলিল ও হালিমা বেগমের প্রথম সন্তান তাই তাদের আনন্দের শেষ নেই।

 

জন্ম নেওয়া শিশু দুটির জোড়া তবে প্রস্রাব পায়খানার রাস্তা সবই ঠিক আছে। বুকের কিছু অংশ ও পেটের কিছু অংশ পুরোটাই জোড়া তবুও শিশু দুটিকে পেয়ে তারা খুবই খুশি। এখন শিশু দুটিকে আলাদা করতে দরকার চিকিৎসা। তাই তাদের ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করেন দরিদ্র দম্পতি।

বুধবার (২ মার্চ) রাতে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ২০৬ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বেডে ভর্তি আছে জোড়া শিশু খাদিজা ও আয়সা। তাদের বয়স দুইমাস ১৯ দিন।

শিশুটির মা হালিমা বেগম বাংলানিউজকে জানান, গর্ভে ৯ মাসের সময় রংপুর একটি ক্লিনিকে ভর্তি হই। সেখানে সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয় খাদিজা ও আয়েশা। পরে সেখানকার ডাক্তারদের পরামর্শে তাদের রংপুর সদরের সরকারি হাসপাতালে তাদের তিন দিন ভর্তি রাখা হয়। পরে সেখান থেকে তাদের বাসায় নেওয়া হয়।

গত তিন বছর আগে ভ্যান চালক খলিলের সঙ্গে হালিমা বেগমের বিয়ে হয়। তিনি আরো জানান, জোড়া শিশুর জন্ম দিয়েছি। এখন তাদের চিকিৎসা করাতে হবে। চিকিৎসকরা তাদের আলাদা করে দিবে ইনশাল্লাহ আমার সন্তানদের সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে যাব। এজন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন তিনি।

হাসপাতালে অবস্থানরত তার আত্মীয় স্বজনরা জানান, এই দম্পতি হতদরিদ্র। তার স্বামী ভ্যান চালিয়ে সংসার চালায়। স্থানীয় কয়েকজন এর কিছু আর্থিক সহায়তায় গতকাল (১ মার্চ) ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশু সার্জারি বিভাগের ডাক্তার খাদিজা ও আয়েশাকে দেখেছে এবং চিকিৎসকরা কিছু পরীক্ষা দিয়েছে। সেই পরীক্ষার পরে রিপোর্ট দেখে ডাক্তার স্যাররা ব্যবস্থা নিবে বলে আমাদের জানিয়েছেন।

জোড়া শিশুটির মা আরো জানান, আয়েশা ও খাদিজার সবকিছুই ঠিক আছে। হাত পা পায়খানা ও প্রস্রাবের রাস্তা সবই ঠিক আছে। তবে বুকের কিছু অংশ ও পেটের কিছু অংশও জোড়া লাগানো। বুকের দুধের পাশাপাশি কৌটার দুধ ও তাদের খাওয়ানো হচ্ছে।

এ সময় দেখা যায় হাসপাতালে অবস্থানরত জোড়া শিশু দুইটির নানি মাজেদা বেগম তাদের কোলে নিয়ে হাসপাতালে পায়চারি করছেন। মাঝে মাঝে জোড়া শিশু দুইটি কেঁদে উঠলে তাদের ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়।

হাসপাতালের শিশু পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফ উল হক কাজল বলেন, জোড়া শিশু দুটি গতকাল বুধবার ভর্তি হয়েছে। শিশু দুটির বুকের কিছু অংশ থেকে পেট পর্যন্ত জোড়া লাগানো। এখন তাদের পরীক্ষা করানো হবে। তাদের শরীরের কন্ডিশন কেমন সেগুলো দেখা হবে। পরে বোর্ড বসিয়ে রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।  

হাসপাতালের পরিচালক মো. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক জানান, আমাদের চিকিৎসকরা সব রোগীকেই প্রাধান্য দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে। রংপুরের জোড়া শিশুর যতরকম চিকিৎসা প্রয়োজন সবকিছুই দেওয়া হবে। আগে জোড়া শিশুর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিবে চিকিৎসকরা।

আরও পড়ুন
>> জোড়া শিশু লাবিবা-লামিসার অস্ত্রোপচার সোমবার

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২২
এজেডএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।