ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বগুড়ায় মৎস্য চাষিকে কুপিয়ে হত্যা: ৪ বাড়িতে আগুন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২২
বগুড়ায় মৎস্য চাষিকে কুপিয়ে হত্যা: ৪ বাড়িতে আগুন ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি।

বগুড়া: বগুড়ার কাহালু উপজেলায় সেকেন্দার আলী (৫৫) নামে এক মৎস্য খামারের মালিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার জেরে হামলাকারী ও তার পরিবারের চার বাড়ি আগুনে দিয়েছে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে গেলে তাদেরও বাধা দেওয়া হয়।

পরে পুলিশ গিয়ে গ্রামবাসীকে সরিয়ে আগুন নেভায়।

শনিবার (৫ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার জয়তুন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  

জানা যায়, শাপলা মৎস্য খামারের মালিক সেকেন্দার তাঁর নিজ গ্রামের বাসিন্দাদের ভোটে নির্বাচিত গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ছিলেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।  

এর আগে, ২ মার্চ তাঁদের গ্রামে এক ব্যক্তি মারা যান। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজার নামাজ হওয়ার কথা। কিন্তু সেই মাঠ উন্নয়নের জন্য সম্প্রতি মাটি ভরাট করার কারণে অসমতল ছিল। গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সভাপতি হিসেবে সেকেন্দার আলী সেখানে গিয়ে জানাজার আগেই মাঠটি সমতল করতে উদ্যোগ নেন। কাজ শেষে রাত সোয়া ৭টার দিকে যখন গ্রামবাসী জানাজায় দাঁড়াবে সেই মুহূর্তে হামলার ঘটনা ঘটে।

কাহালু সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আমিরুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন তাঁতী লীগের সভাপতি রাকিব হোসেনের নেতৃত্বে কমপক্ষে ১০ জনের সশস্ত্র যুবক অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এসময় তারা এলোপাতাড়িভাবে সেকেন্দার আলীকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। গুরুতর আহত সেকেন্দারকে নিয়ে গ্রামবাসী প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। সেখান থেকে তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। শজিমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে ঢাকার একটি হাসপাতালে স্থান্তান্তর করেন। সেখানে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে এবং পরে হার্ট ফাউন্ডেশনে নেওয়া হলে শনিবার সকাল ১০টায় মারা যান সেকেন্দার।

এটিকে তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছলে এ হত্যার ঘটনার জেরে গ্রামবাসী রাকিব, তার বাবা ফজলু ও চাচা নজরুল ইসলামসহ চারজনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভায় বলেও উল্লেখ করেন ইউপি সদস্য আমিরুল।

কাহালু ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রুবেল রানা জানান, আগুন লাগানোর খবর পেয়ে জয়তুল গ্রামে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি গেলে ক্ষিপ্ত জনতা আগুন নেভাতে বাধা দেয়। পরে পুলিশ পৌঁছে জনতাকে হটিয়ে দিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়।

কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমবার হোসেন জানান, পূর্ব-বিরোধের কারণে সেকেন্দারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামবাসী চারটি বাড়িতে আগুন দেয়। পরে তা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সেকেন্দারের চিকিৎসার কারণে ঘটনার দিন থেকেই পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় অবস্থান করায় থানায় কোন মামলা বা অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে, হালমার পর থেকেই জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।