ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

আশাশুনির মানবতাবিরোধী দুই অপরাধী গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
আশাশুনির মানবতাবিরোধী দুই অপরাধী গ্রেফতার

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত মানবতাবিরোধী দুই অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।

রোববার (১৩ মার্চ) দুপুরে আশাশুনির চাপড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- আশাশুনির পাইথালী এলাকার মজিবর রহমান ধনু ও চাপড়ার আবুল হোসেন।  

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। রোববার তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।  

আদেশ পেয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মজিবর রহমান ধনুকে আশাশুনির পাইথালী এলাকার হাসেম রাজাকারের বাগানবাড়ি থেকে ও আবুল হোসেনকে চাপড়ার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের পরপরই তাদের সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে।

পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আলাউদ্দীন সানা জানান, আশাশুনি গ্রামের গোরা ঠাকুরকে হত্যা ও তার মেয়েকে ধর্ষণ করে গুম করার অভিযোগ রয়েছে মজিবর রহমান ধনু, আবুল হোসেন ও শহীদ আব্দুর রাজ্জাককে হত্যাকারী লিয়াকত কমান্ডারের বিরুদ্ধে। এছাড়া চাপড়ার আনিসুর রহমান, শরাফপুর গ্রামের মেঘনাথ দাস, তারাপদ দাস ও কেষ্টপদ দাসকে একাত্তর সালে গুলি করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি (অ্যাড. আলাউদ্দীন সানা) সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার পরামর্শ দেন আদালত।

পরামর্শ অনুযায়ী আলাউদ্দীন সানা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাইলপত্র হস্তান্তর করেন। প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সরকার বাদী হয়ে একটি মামলা করে। মামলা নম্বর আইসিটি বিডি মিস কেস ৩/২২।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার পরিদর্শক আমিনুর রশিদ, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রাজিয়া সুলতানা চমন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাতক্ষীরা জেলার সাক্ষ্য সমন্বয়কারী শাহ আলম জানান, তদন্ত কর্মকর্তারা সর্বশেষ গত মাসের ১৭ তারিখে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার স্থান পরিদর্শন করেন। এর আগেও তারা বেশ কয়েকবার সাতক্ষীরায় এসেছেন।

সরেজমিনে পরিদর্শন ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তারা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দেন। ইতোমধ্যে অন্যতম আসামি লিয়াকত কমান্ডার মারা যাওয়ায় তাকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। রোববার বাকি দু’জন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়া হয় ট্রাইব্যুনালের কাছে। আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে রোববারই সাতক্ষীরার আশাশুনি এলাকার রাজাকার হিসেবে পরিচিত মজিবর রহমান ধনু ও আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।