নড়াইল: নড়াইলের সর্ববৃহৎ চাচুড়ী বিল ও পাটেশ্বরী বিলে নদীর জোয়ার-ভাটার পানি নিষ্কাশিত হয় ছোট বড় চারটি খাল দিয়ে। কিন্তু নদী থেকে খালের মাধ্যমে পানি চলাচলের অধিকাংশ স্লুইচ গেটই অকেজো।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্লুইচ গেটগুলোর কোনটা মেরামত চলছে, আবার কোনটা অকেজো। দড়ি দিয়ে বেঁধে চলছে স্লুইচ গেট ওঠানামার কাজ। এভাবে বছরের পর বছর ধরে চলছে নদী থেকে খালের পানি জমিতে ঢুকিয়ে সেচকাজ। জোয়ারের পানি খালে ঢুকলেও অকেজো স্লুইচ গেটের মাধ্যমে তা আর বের হতে পারে না।
নড়াইলের সর্ববৃহৎ চাচুড়ি আর পাটেশ্বরী বিলের মধ্যে চিত্রা নদীর পানি খালে ঢোকে পাটেশ্বরী স্লুইচ গেটের মাধ্যমে। পাটেশ্বরী গেটের ১০টি দরজাই নষ্ট। পাশের টাকিমারার ২টি, যাদবপুর, কোড়গ্রাম, জোলার খালসহ জেলার ৭২ টি স্লুইচ গেট সবই চলছে একই কায়দায়।
পুরুলিয়া ইউনিয়নের দিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মিল্টন সর্দার বাংলানিউজকে বলেন, নদীতে জোয়ার এলে ভাঙ্গা স্লুইচ গেটে দিয়ে পানি ঢুকে পড়ে কিন্তু ভাটার সময় পানির বেগ কম থাকায় ঠিকমতো বের হতে পারে না। তাছাড়া স্লুইচ গেটের দরজা খোলা ও বন্ধ করার কোনো তদারকি না থাকায় সমস্যা আরো প্রকট হয়েছে।
মহিষখোলা গ্রাম ও পাটেশ্বরী গ্রামের একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গেট তদারকির অভাবে জোয়ারের লবণ পানি জমি আটকে থাকে। ফলে ধান উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যখন পানি প্রয়োজন নেই তখন পানি বের করা যায় না। আবার যখন সেচ কাজের জন্য পানি প্রয়োজন তখন প্রর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। বর্তমানে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকায় অনেক জমিতে এখনো ধান রোপন করা সম্ভব হয়নি। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান চান তারা।
কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবীর কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, শীত মৌসুমে দুইবার ভারি বৃষ্টি, স্লুইচ গেট দিয়ে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় এবছর চাচুড়ি-পাটেশ্বরী বিলের কয়েক হাজার একর বোরো উৎপাদন ৩ মাস পিছিয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে মারাত্মক ক্ষতির পড়তে পারেন কৃষকরা।
পাচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জহুরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, পলি পড়ে খালগুলো ভরাট হয়ে পড়েছে। ফলে জোয়ারের পানি ফসলের জমিতে ঢুকে পড়ছে। দ্রুতই স্লুইচ গেটগুলো মেরামতের পাশাপাশি খালগুলোর ও সংস্কার প্রয়োজন।
নড়াইল পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে সাউথইস্ট প্রকল্পের আওতায় স্লুইচ গেটের রেগুলেটর মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। এগুলো মেরামত হলেই আশা করি বিলের পানি নিষ্কাশিত হতে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২২
এসআইএস