ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বাবার কোলে থাকা শিশুকে গুলি করে হত্যা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
বাবার কোলে থাকা শিশুকে গুলি করে হত্যা 

নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রিমন বাহিনীর সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাবার কোলে থাকা জান্নাতুল ফেরদাউস জান্নাত (৩) নামে একটি শিশু নিহত হয়েছে।  

বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মলকার বাপের দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা নেওয়ার পথে জান্নাত মারা যায়।  

এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা সৌদি প্রবাসী মাওলানা আবু জাহেরও (৩৭) গুলিবিদ্ধ হন। তিনি উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাসাদ মিয়ার বাড়ির মৃত জানু সরদারের ছেলে। এ ঘটনায় ধনু নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।  

অভিযুক্ত রিমন (২৫) একই উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের দানিজ বেপারী বাড়ির আব্দুল মমিন উল্যার ছেলে।

হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়রম্যান মো. শাহ আজিম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রিমন এলাকার চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

নিহতের মামাতো ভাই ব্যবসায়ী আবদুল্যাহ আল মামুন অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক দিন আগে আমাদের বাড়ির আল আমিন নামে এক ব্যক্তি মাটি বিক্রি করেন সন্ত্রাসী রিমনের চাচা বাদশার কাছে। বাদশা ওই জায়গা থেকে ছয় ফুট মাটি কাটেন। এরপর আরও মাটি কাটতে গেলে আমাদের বাড়ির লোকজন তাকে বাধা দেন। এভাবে মাটি কাটতে গেলে পাশের জমি ভেঙে পড়বে।  

একপর্যায়ে মাটি কাটতে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে সন্ত্রাসী রিমন ও তার সহযোগী রহিম, মহিন, সুজনসহ কয়েকজন গত দুইদিন একাধিকবার আমাদের বাড়িতে এসে গুলি ছুড়েছেন এবং আমার 
অন্তঃসত্ত্বা 
 ভাগ্নির পেটে লাথি দেন। বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ওই নারীকে প্রথমে চিকিৎসা দিতে বলে।

মামুন অভিযোগ করে আরও বলেন, মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের জের ধরে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে সন্ত্রাসী রিমনের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য রহিম, মহিন, সুজনসহ ১০-১৫ জন অস্ত্রধারী মালকার বাপের দোকানের কাছে অবস্থিত আমার দোকানে এসে আমাকে গালিগালাজ করেন। এসময় আমার মামা জাহের তার শিশুকন্যা জান্নাতকে কোলে নিয়ে দোকানে আসেন চিপস আর চকলেট কিনতে।  

সন্ত্রাসী রিমন আমার মামাকে আমার দোকানে দেখে তাকে গালমন্দ করে বলেন, তোর শেল্টারে এরা এসব করছে। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তারা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন এবং জান্নাতকে ইট দিয়ে আঘাত করেন। এরপর মামা দোকান থেকে বের হয়ে বাড়ির দিকে যাত্রা করলে রিমন ও তার বাহিনীর সদস্যরা পেছন থেকে আবার জান্নাত এবং মামাকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। এতে জান্নাতের কানে ও মাথায় এবং মামার চোখে গুলি লাগে।  

এরপর এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জান্নাত মারা যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে। অভিযুক্তদের আটক করতে অভিযান চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।