ঢাকা, শনিবার, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের ভয়ে ডোবায় ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু, আসামি বিএনপির কাউন্সিলর!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২২
পুলিশের ভয়ে ডোবায় ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু, আসামি বিএনপির কাউন্সিলর!

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের বন্দরের বাগবাড়ী এলাকায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ডোবায় পড়ে নিলয় আহমেদ বাবুর মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপির কাউন্সিলরকে হুকুমের আসামি করে মামলা হয়েছে। এতে সিটি করপোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশাসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ মে) নিহত নিলয়ের মা লিলি বেগম বাদী হয়ে এই মামলা করেন। বুধবার মরদেহ উদ্ধারের পর নিহতের পরিবার ও স্বজনরা পুলিশকে দোষারোপ করলেও মামলায় উল্লেখ নেই বিষয়টি। কাউন্সিলর আশা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি।

এদিকে এ ঘটনায় এরই মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুজনেই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তারা হলেন- হাসিনা বেগম ও সোবহান। গ্রেফতারকৃত এজাহারভুক্ত হাসিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

লিলি বেগম মামলায় উল্লেখ করেন, নিহত নিলয়ের বিরুদ্ধে হাসিনা বেগম একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগ তদন্তের জন্য বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) রওশন ফেরদৌস ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনা তদন্তের পর স্থানীয় কাউন্সিলর বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য দায়িত্ব নেন। তারপর স্থানীয় কাউন্সিলর নিলয়কে তার অফিসে আসার জন্য ডাকেন। কিন্তু নিলয় কাউন্সিলরের অফিসে না যাওয়ায় আমিনুল, হাসিনা বেগম ও শিপলুর মাধ্যমে নিলয়কে ধরে অফিসে আনার নির্দেশ দেন কাউন্সিলর।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, পরে কাউন্সিলরের নির্দেশে তারা ৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় নিলয়ের বাড়িতে আসেন। নিলয় তাদের দেখে বাসা থেকে বের হয়ে পালানোর সময় পুকুরে পড়ে যান। তখন মামলায় উল্লেখিত আমিনুল, হাসিন বেগম, শিপলু, আফজাল, জিপু, শহিদুল ইসলাম শইক্কা, সিরাজুল ইসলাম, হাসান, সোবহান নিলয়কে ইট মারলে মাথায় জখম পেয়ে তিনি (নিলয়) পুকুরে পড়ে থাকেন। পরে তারা মরদেহ গোপন করার জন্য প্রচার চালায় যে, নিলয় পুকুর থেকে ওঠে চলে গেছে। তারপর অনেক খোঁজ করেও নিলয়কে পাওয়া যায়নি। ৪ মে সকাল পুকুরে খুঁজতে গেলে কচুরি পানার নিচ থেকে নিলয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে বুধবার (৪ মে) বিকেলে উপজেলার বাগবাড়ি এলাকার ডোবা থেকে নিলয় আহমেদ বাবুর মরদেহ উদ্ধারের সময়ে স্বজনরা অভিযোগ করেন, বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রওশন ফেরদৌসসহ সাদা পোশাকে কয়েকজন ধাওয়া দিলে নিলয় ডোবায় লাফ দেয়। পরে তাকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয়। সেই ইটের আঘাতে আহত হয়ে পানিতে ডুবে মারা যায় নিলয়।

এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই রাতেই জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) নির্দেশে এসআই রওশন ফেরদৌসকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইন্সে পাঠানো হয়।

কাউন্সিলর আশা জানান, বাবু কে, কেমন ছেলে- তা এলাকার সবাই জানে। এলাকার কেউ মারা গেলেই কাউন্সিলরের দোষ বা এটা নিয়ে রাজনীতি করা অতিরঞ্জিত। এটা কাম্য নয়।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিপক চন্দ্র সাহা জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের উপ-পরিদর্শক রওশন ফেরদৌসকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে, সেখানে কাউন্সিলর কাউসারকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৯ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২২
এমআরপি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।