বরিশাল: পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে কর্মক্ষেত্রে ফিরতে বরিশাল নদীবন্দরে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। বাড়তি যাত্রীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষকে।
আর তাই যাত্রীবোঝাই হয়ে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের একঘণ্টা আগেই সন্ধ্যা ৭টার পর থেকেই লঞ্চগুলোকে বরিশাল নদীবন্দর ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে পারাবত-১৮ লঞ্চকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুশফিকুর রহমান। সেই সঙ্গে এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জাবেদ হোসেন চৌধুরী।
এদিকে শুক্রবার (৬ মে) রাতে বরিশাল নদীবন্দর থেকে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে ১১টি লঞ্চ ও বিআইডব্লিউটিসির একটি জাহাজ ছেড়ে গেছে। এছাড়াও দুটো ভায়া লঞ্চের বরিশাল নদীবন্দর হয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে।
বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তারা জানান, দুপুর ১২টার পর থেকেই সাধারণ যাত্রীরা লঞ্চে ওঠার জন্য টার্মিনালে নোঙর করা লঞ্চগুলোতে উঠতে শুরু করে। ফলে প্রত্যেকটি লঞ্চের ডেক কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সন্ধ্যার আগেই।
এদিকে ডেক বোঝাই হয়ে যাওয়ায় ঘাট ত্যাগ করার আগে সবগুলো লঞ্চের ছাদও পরিপূর্ণ হয়ে যায় যাত্রীতে। ছুটি শেষ হওয়ায় এমন চাপ বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।
ছুটি শেষে রাজধানীমুখী যাত্রীরা বলছেন, আসার সময় অনেকটা স্বস্তি নিয়েই এসেছিলেন। কিন্তু ঢাকা যাওয়ার সময় কিছুটা ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে ফিরতি কেবিন পেতে অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান অধিকাংশ যাত্রী। আবার মোটরসাইকেল লঞ্চে বহন করা থেকে বিরত থাকতে বললেও পন্টুনে এ যানের চলাচল ছিল চোখে পড়ার মতো।
সোহেল নামে এক যাত্রী জানান, আসার সময় খুব সহজেই আমার ভাই কেবিন করে দিয়েছিল। কিন্ত এখন ফেরার সময় কেবিন পেতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।
জোবায়ের নামে আইটি ফার্মের এক চাকরিজীবী জানান, ঈদের ছুটি শেষ তাই অফিসে যোগ দিতে ঢাকা যাচ্ছি। কিন্তু লঞ্চ ঘাটে আসার পথেই ঝামেলা পোহাতে হয়েছে, বৃষ্টি নামার ফলে গণপরিবহনের ভাড়া দ্বিগুণ নিয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, বরিশাল নদী বন্দর থেকে শুক্রবার পারাবাত- ৯,১০ ও ১৮, অ্যাডভেঞ্চার-১, মানামী, সুরুভী-৮ ও ৯, সুন্দরবন-১০, কীর্তনখোলা- ২ ও ১০, কুয়াকাটা-২ লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। পাশাপাশি ডে-সার্ভিসের আরও তিনটি লঞ্চ দুপুরে ছেড়ে গেছে। গত দু'দিনের তুলনায় আজ যাত্রীর চাপ কয়েকগুণ বেশি।
তিনি আরও বলেন,আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি যাতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে কোনো লঞ্চ না ছাড়ে। এছাড়াও আমাদের সার্বিক সহায়তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা রয়েছে।
এদিকে নদীবন্দরে যাত্রীদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র্যাব-৮, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, আনসার, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরাও রয়েছেন।
এছাড়া লঞ্চগুলো যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই না করতে পারে তা তদারকির জন্য জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৬ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২২
এমএস/এমএমজেড