ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

চেয়ারম্যানের ওপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা, আটক চার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৪ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২২
চেয়ারম্যানের ওপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা, আটক চার

নোয়াখালী: নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নে ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন সোহেলের ওপর হামলা চালিয়েছে কিশোর গ্যাং। এ ঘটনায় স্থানীয়রা দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্যকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

 
 
মঙ্গলবার (১০ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর গ্রামের নূরানী মাদরাসা সংলগ্ন কালামিয়ার টেক এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আটক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হলেন- উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের অন্তর (১৯), পার্শ্ববর্তী বেগমগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রফিকপুর গ্রামের টিপু (২৪,) আবদুল গনি পারভেজ (২৫) ও ইমরান হোসেন শান্ত (২০)।  

নবীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার আবদুল ছোবহান বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে নবীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর গ্রামের জসিমের নতুন বাড়ির পুকুরে কিশোরী মেয়েরা গোসল করতে যায়। এসময় উত্ত্যক্ত করে একই গ্রামের হারিস মোল্লা বাড়ির বাশারের ছেলে রবি (২৩) ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। দীর্ঘদিন থেকে সে ওই মেয়েদের উক্ত্যক্ত করে আসছিল।

পরে ভুক্তভোগী কিশোরীদের পরিবার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে জানায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করায় বিকেলে রবি ও কিশোর গ্যাংয়ের বহিরাগত সদস্যরা ইভটিজিংয়ের শিকার কিশোরীদের বসতঘরে হামলা চালায় এবং তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।

ইউপি সদস্য আরও বলেন, খবর পেয়ে চেয়ারম্যান আমাকে ঘটনাস্থলে পাঠালে বহিরাগত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা চলে যায়। একপর্যায়ে কিশোর গ্যাং বাহিনীর প্রধান রবির মা ও ইভটিজিংয়ের শিকার কিশোরীদের মায়ের মধ্যে তুমুল বাগবিতণ্ডা হয়। তখন বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানাই যে এ সমস্যা আমার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। তখন চেয়ারম্যান আমাকে বলেন আপনি ঘটনাস্থলে থাকেন আমি আসছি।

এরপর চেয়ারম্যান এসে দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করেন। অভিযুক্ত রবিকে চেয়ারম্যানের প্রাইভেটকারে তুলে নেয়। একপর্যায়ে আকস্মিক রবির কিশোর গ্যাংয়ের ৩০-৩৫ জন সদস্য চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাগনে নজরুল ইসলামের (৩৫) ওপর হকিস্টিক, রড নিয়ে হামলা চালায়। এতে চেয়ারম্যান বাম চোখে ও কপালে গুরুতর আঘাত পান। হামলাকারীরা চেয়ারম্যানের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারও ভাঙচুর করে।  
খবর পেয়ে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় চারজনকে আটক করে স্থানীয়রা। পরে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে রাত পৌনে ১টার দিকে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসাধীন নবীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন সোহেল জানান, ইভটিজিং নিয়ে বিরোধের জেরে ইভটিজার কিশোর গ্যাং বাহিনীর সদস্যরা এ হামলা চালায়। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।  

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী জানান, ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চেয়ারম্যান সমস্যা সমাধানে গেলে তাঁর ওপর হামলার এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।  

আটকদের থানায় রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের লিখিত এজহার পেলে আটকদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।