ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

২ ঘণ্টার কাজ ৩০ মিনিটেই শেষ, রেললাইন সচল

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২২
২ ঘণ্টার কাজ ৩০ মিনিটেই শেষ, রেললাইন সচল

পাবনা (ঈশ্বরদী): পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আওতায় ঈশ্বরদী-খুলনা রেলরুটের যশোর ক্যান্টনমেন্ট সেনানিবাসের কাছে পাকিস্তানি আমলে নির্মিত বক্স কালভার্ট (স্ল্যাব) ব্রিজে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।  

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে প্রকৌশলী দফতরের থেকে অস্থায়ী রেললাইন নির্মিত করার জন্য ২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিলেও প্রকৌশলীরা ২ ঘণ্টার কাজ মাত্র ৩০ মিনিটে শেষ করে লাইনটি সচল করে।

৭১ বছর আগের ৫ ফুট লম্বা কালভার্ট সংস্কার কাজ ৪৫ লাখ ব্যয়ে ১৫০ দিন অর্থাৎ পাঁচমাসে শেষ করতে বলা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই গুরুত্বপূর্ণ রেলরুট হওয়ার কারণে কাজটি শেষ হতে পারে।  

বুধবার (২৫ মে) দুপুরে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আওতায় ঈশ্বরদী-খুলনা রেলরুটের যশোর ক্যান্টনমেন্ট-মেহেরুল্লানগর রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী যশোহর সেনানিবাসের পাশে ৮ নম্বর ব্রিজে অস্থায়ী ব্যবস্থাপনায় রেললাইন স্থাপন করে ট্রেন চালানোর জন্য উপযোগী করা হয়েছে।

সিসিক্রিপ দিয়ে বিকল্প অস্থায়ী রেললাইন তৈরি করে ওই সিঙ্গেল লাইন দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে  মালবাহী ট্রেন চালানো হয়। সারাদিনে গুরুত্বপূর্ণ রেললাইনে ঢাকাসহ উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে চলাচলকারী ১০ যাত্রীবাহী আন্তঃনগর, মালবাহী ট্রেন চলাচল করে।  

বুধবার (২৫ মে) রেলওয়ের ৮ নম্বর কালভার্ট সংস্কারের আগে পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ, ফাটলধরা আরসিসি স্লাব সরিয়ে লোহার জয়েস্ট গার্ডার দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওই রেলরুট সচল করা হয়। অস্থায়ী ব্যবস্থাপনায় রেললাইন দিয়ে ঢাকাসহ উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের সকল ট্রেন চলবে।  

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহী প্রধান প্রকৌশলী দফতর অস্থায়ী লাইনটি তৈরি করতে কাজের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল মাত্র ২ ঘণ্টা। বেলা ১১টা ১৫ থেকে ১টা ১৫ মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল গুরুত্বপূর্ণ রেলরুট দিয়ে। খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী রকেট মেইল ট্রেনটি বিলম্ব থাকার কারণে ১১টা ৪৭-এ কাজ শুরু হয়। রেল-শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ১২টা ১৭ মিনিটে শেষ হয়।  

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহীর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী লিয়াকত শরীফ খানের নেতৃত্বে  উপস্থিত ছিলেন- পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সেতু প্রকৌশলী নাজিব কায়সার, নির্বাহী প্রকৌশলী যশোহর, কাজী ওয়ালীউল হক, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকোশলী (কার্য) চাঁদ আহম্মেদ, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকোশলী ব্রিজ হাসান আলী, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকোশলী (পথ) মাহাবুব হাসান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার রবিউল ইসলাম রবি প্রমুখ।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকোশলী (ব্রিজ) হাসান আলী বাংলানিউজকে জানান, ঈশ্বরদী-খুলনা রেলরুটটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কালভার্টটি টপস্লাবগুলোতে ফাটল ধরে নড়বড় করতো। কালভার্টটির ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে স্লাবগুলো সরিয়ে নতুনভাবে কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকৌশলী (ডিএন১) বীরবল মণ্ডল বাংলানিউজকে জানান, পাকিস্তানি আমলে দেশ ভাগের আগে নির্মিত কালভার্ট ফাটল ধরার কারণে আন্তদেশীয় ট্রেনসহ ৬ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন ঝুঁকিতে চলাচল করতো। পাকশী বিভাগের আওতায় আন্তদেশীয় ট্রেনসহ ৬ জোড়া আন্তনগর, ৩ জোড়া মেইল-লোকাল ট্রেন ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে।  

পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল আরও জানান, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ার কারণে কালভার্টটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কালভার্টটির অদূরে এসে যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো থেমে যেতো। কালভার্টটি সংস্কার হলে নিরাপদে ট্রেন চলাচল করবে।  

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী লিয়াকত শরীফ খান বাংলানিউজকে জানান, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আওতায় পুরোনো, ঝুঁকিপূর্ণ রেলের ব্রিজগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করছি। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো পুনর্নির্মাণ সংস্কারের কাজটি চলমান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে ব্রিজগুলো সংস্কার করা হবে।  

উল্লেখ্য, সেই পাকিস্তানি আমলে দেশ ভাগের আগে দর্শনা-খুলনা রেলরুটে ট্রেন চালুর পরে ১৯৪৯ সালের দিকে কালভার্টটি নির্মিত করে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর রেলওয়েতে দৃশ্যমান উন্নয়নের যাত্রা শুরু করেছে বর্তমান সরকার। পর্যায়ক্রমে সব ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনা রেলওয়ে ব্রিজগুলো সংস্কার করছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২২ 
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।