ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

চাঁদপুরের বর্ষা বিভীষিকাময়: ডা. দীপু মনি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
চাঁদপুরের বর্ষা বিভীষিকাময়: ডা. দীপু মনি

চাঁদপুর: মেঘনার ভাঙন থেকে চাঁদপুর শহরকে রক্ষার জন্য জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।  

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্ষা বিভিন্ন চেহারা নিয়ে এলেও চাঁদপুরে আসে বিভীষিকাময় চেহারা নিয়ে।

ভাঙন শুরু হলে নদী প্রতিরক্ষার জন্য প্রস্তুতিরও সময় দেয় না। আপনি প্রস্তুতি নিয়ে এক সপ্তাহ পরে কাজ ধরবেন, এর আগেই ভেঙে তলিয়ে যাবে। ৭ ঘণ্টা সময়ও পাওয়া যায় না। আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে বলতে চাই এই মুহূর্তেই শহর রক্ষার কাজ শুরু করতে হবে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইডাব্লিউএম ও সিইজিআইএস কর্তৃক আয়োজিত চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ প্রকল্পের পুনর্বাসনের লক্ষে বিস্তারিত সমীক্ষা শীর্ষক প্রকল্পের কারিগরি এবং পরিবেশগত ও সামাজিক মূল্যায়নের নিমিত্ত মতবিনিময় কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছরের ভাঙনের সময় দিন ও রাতে প্রশাসনের লোকদেরক নদী পাহাড়া দিতে হয়েছে। ওই সব সময় ঠিক করে শ্রমিকও পাওয়া যায় না। সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পাস হওয়ার আগেই শহরকে রক্ষা করতে হবে। সমীক্ষা রিপোর্টসহ যাবতীয় কাজ শেষ হতে সময় লাগবে। আমি মনে করি ইতোমধ্যে দেশের অন্য যেসব স্থানে নদী ভাঙন রোধে কাজ শুরু হয়েছে এবং প্রকল্প পাস হয়েছে, তার চাইতে চাঁদপুরে আগে কাজ শুরু করা প্রয়োজন ছিল।

জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাপাউবো’র মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ, বাপাউবোর’ (পরিকল্পনা, নকশা ও গবেষণা) বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. জিয়া উদ্দিন বেগ, বাপাউবো কুমিল্লা পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান ও বাপাউবো’র পরিকল্পনা (পুর.) এর প্রধান প্রকৌশলী ড. শ্যামল চন্দ্র দাস।

চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ প্রকল্পের বিষয়ে সমীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিইজিআইএস-এর নদী প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক সরোয়ার জাহান ও ইঞ্জিনিয়ার মোতালেব হোসেন।

সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়, সারাদেশের নদীগুলোর ৯০ শতাংশ নদীর পানি চাঁদপুর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগরে যায়। চাঁদপুর শহর রক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব দুটিই পড়বে। তবে নদী ভাঙন কমবে, ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে ৫.৫ শতাংশ। মৎস্য উৎপাদন নেট বৃদ্ধি পাবে প্রায় ৭৪ মেট্টিক টন। জলজ বাস্তুসংস্থানের অবস্থার উন্নতি হবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নদী ড্রেজিং হলে চাঁদপুরের বিপরীত দিকে এবং ভাটির দিকে নদী ভাঙন হতে পারে। নির্মাণ বর্জ্য লেবার শেডের বর্জ্য ইত্যাদি আশপাশের পরিবেশকে দূষিত করবে। নির্মাণ সাইটে মাছের প্রজাতির গঠন সাময়িকভাবে হ্রাস পাবে। জলজ প্রাণীদের ব্যাঘাত এবং জলজ বস্তুসংস্থানের অবস্থার অবনতি হতে পারে। জেগে ওঠা চরে পর্যটন কেন্দ্র ভেঙে ফেলার ফলে পর্যটক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শহর রক্ষা বাঁধসহ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের ব্যয় হবে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল ।  

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম রেফাত জামিল, মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফাহিম ইকবাল, সড়ক ও জনপথ বিভাগ চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুজ্জোহা, চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান, কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার মাশহাদ উদ্দিন নাহিয়ান, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২ 
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।