ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বন্যার্ত অন্তঃসত্বাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিল নৌবাহিনী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২২
বন্যার্ত অন্তঃসত্বাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিল নৌবাহিনী

সিলেট: ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে আছে পুরো সুনামগঞ্জ। হাওরবেষ্টিত জেলাটির জামালগঞ্জ উপজেলায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ চলছে।

কোথাও পা রাখার এক চিলতে শুকনো জায়গা নেই। এ অবস্থায় মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে প্রসব বেদনা ওঠে জামালগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আক্কেল আলীর স্ত্রী শিউলি বেগমের (২৮)।

চারিদিকে বন্যার পানিতে ভয়াবহ অবস্থা। রয়েছে নৌকা্ সঙ্কট। স্বাভাবিক ভাবেই অন্তঃসত্বা শিউলিকে নিয়ে বিপাকে পড়ে পরিবার। এ ঘ্টনা জানতে পেরে নৌবাহিনীর সহযোগীতা চান জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।  

পরে নৌবাহিনীর চিকিৎসক টিম ওই নারীকে উদ্ধার করে এবং তাদের উচ্চগতি সম্পন্ন একটি স্পীডবোটে তুলে নিয়ে আসে সুনামগঞ্জ শহরে। পথে নৌবাহিনীর মেডিক্যাল টিম ওই নারীর স্বাস্থ্য পরিক্ষার মাধ্যমে তাকে সুরক্ষা দেন। বিকেলের দিকে অন্তঃসত্বা নারী ও তার স্বজনদের একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দিয়ে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করে নৌবাহিনী।

প্রসব বেদনা ওঠা নারীকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌছে দিতে সহযোগীতা করায় নৌবাহিনীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ভোক্তভোগী পরিবারের লোকজন।
 

উদ্ধার কাজে নিয়োজিত নৌবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার বলেন, সুনামগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে আমরা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যস্ত ছিলাম। তখন খবর পাই ওই নারীর লেবার পেইন (প্রসব বেদনা) ওঠলেও হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছেন না। আমরা তাৎক্ষনিক দু’টি বোট ওখানে রেখে একটি বোট নিয়ে এখানে চলে আসি। সঙ্গে মেডিক্যাল টিমও রাখি। ঘটনাস্থলে এসে দেখতে পাই, ওই নারী খুবই নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। তখন দ্রুত তাকে উচ্চ গতিসম্পন্ন স্পীড বোটে করে জামালগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জে নিয়ে আসি।
 
জানা গেছে, সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অসামরিক প্রশাসনকে সাহায্য করতে কাজ করছে নৌবাহিনীর বোট ও ডুবুরী দল। সিলেটের প্রত্যন্ত বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে নৌবাহিনীর ৬ জন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ১২টি জেমিনি বোট ও ৩৫ জন ডুবুরী সদস্য উদ্ধার কার্যক্রমে ১০০ জন বিভিন্ন পদবীর নৌ সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।
 
এ বিষয়ে নৌ বাহিনী উদ্ধারকারী দলের কন্টিনজেন্ট কামরুল আবেদীন বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জে তাদের ১০০ জনের টিম উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে। সুনামগঞ্জে তাদের টিম ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নৌবাহিনীর এই উদ্ধার কার্যক্রম চলমান থাকবে। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জ, দিরাই সুনামগঞ্জ সদর ও জামালগঞ্জ এলাকায় উদ্ধার কার্য্ক্রমের অংশ হিসেবে অসংখ্য বানভাসি লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় কে্ন্দ্রে পৌঁছে দেন।

গত ১৫ জুন থেকে টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট নগরী ও জেলার কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, বিশ্বনাথ, কানাইঘাটসহ সিলেট সদরের ৮০ শতাংশ একং সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে করে জীবন নিয়ে শঙ্কিত মানুষজনের পাশে দাঁড়িয়েছে সেনা ও নৌবাহিনী।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৪ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২২
এনইউ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।