ঢাকা, রবিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ জুন ২০২৪, ২২ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মা সেতু সক্ষমতা-মর্যাদার প্রতীক: প্রধানমন্ত্রী

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
পদ্মা সেতু সক্ষমতা-মর্যাদার প্রতীক: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহার কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয়, এ সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব, আমাদের সক্ষমতা আর মর্যাদার প্রতীক।

তিনি বলেন, পদ্মার বুকের লাল-নীল-সবুজ আলোতে জ্বলে ওঠেছে পদ্মা সেতু।

শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা পর্যায়ে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়। সেই অপবাদ সহ্য করেছেন আমার পরিবারের সদস্য ছোটবোন শেখ রেহানা, তার পুত্র রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, আমার দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, আমার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ কয়েকজন সহকর্মী। তারা চরম মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়েছিলেন। আমি তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আজকে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বসে পড়েনি। বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কাছে আমরা প্রমাণ করেছি, ‘আমরাও পারি। ' পদ্মা সেতু তাই আত্মমর্যাদা ও বাঙালির সক্ষমতা প্রমাণের সেতু শুধু নয়, পুরো জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধও। দেশের জনগণই আমার সাহসের ঠিকানা। আমি তাঁদের স্যালুট জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা আর ১০টা সাধারণ নদীর মতো নয়। ভরা বর্ষায় পদ্মা নদীর পানির প্রবাহ প্রতি সেকেন্ডে চার থেকে সাড়ে চার ঘন মিটার। আমাজনের পর পদ্মা বিশ্বের সবচেয়ে স্রোতস্বিনী নদী। প্রযুক্তি এবং কারিগরি নানা বিষয় বিবেচনায় নিলে এর বাস্তবায়ন ছিল সত্যিই একটা দুরূহ চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে হয়েছে।

তিন আরও বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের গুণগত মানে কোনো আপস করা হয়নি। এই সেতু নির্মিত হয়েছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে। সম্পূর্ণস্বচ্ছতা বজায় রেখে পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে। পদ্মা সেতুর পাইল বা মাটির গভীরে বসানো ভিত্তি এখন পর্যন্ত বিশ্বে গভীরতম। সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীর পর্যন্ত এই সেতুর পাইল বসানো হয়েছে। ভূমিকম্প প্রতিরোধ বিবেচনায় ব্যবহৃত হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এ রকম আরও বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে এই সেতুর নির্মাণ পদ্ধতি বিশ্বজুড়ে প্রকৌশলবিদ্যার পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত হবে- এটা নিশ্চিত। এ বিশাল কর্মযজ্ঞ থেকে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছেন আমাদের দেশের প্রকৌশলীরা। ভবিষ্যতে নিজেরাই এ ধরনের জটিল সেতু বা অবকাঠামো নির্মাণ করতে সক্ষম হবো আমরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সেতু নির্মাণ যেমন, তেমনি আঁকাবাঁকা, খরস্রোতা উন্মত্ত পদ্মা নদীকে শাসনে রাখাটাও একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জও সফলভাবে মোকাবিলা করে নদীর দুই পাড়কে সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেতুর উভয় দিকে রয়েছে উন্নত ব্যবস্থাপনাসমৃদ্ধ ও দৃষ্টিনন্দন সার্ভিস এরিয়া।

মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় সুধী সমাবেশে যোগ দিয়ে সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
এনবি/এমএমইউ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।