ঢাকা, রবিবার, ২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, লড়াই আমার সঙ্গে করুন: মাশরাফি  

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২২
মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, লড়াই আমার সঙ্গে করুন: মাশরাফি
 

নড়াইল: সম্প্রতি মহানবী হজরত মোহাম্মদকে (সা.) কটূক্তি করে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের হিন্দু অধ্যুষিত সাহাপাড়ায় বাড়িঘর, দোকানপাট ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
 
নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে।


 
শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেলে তিনি দিঘলিয়া গ্রাম ঘুরে দেখেন। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহযোগিতা করার পাশাপাশি মানসিক শক্তি জোগাতে সবাইকে পাশে থাকার অনুরোধ করেছেন তিনি।

এসময় জেলা ও উপজেলা আওয়াগী লীগের বেশকিছু নেতাকর্মী ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
সম্প্রতি নড়াইলে ধর্মীয় উস্কানিমূলক দু’টি ঘটনার বিশ্লেষণ করে তিনি রোববার (১৭ জুলাই) রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে নড়াইলের মানুষকে একটি বার্তা দিয়েছেন।
 
নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন এমন একটি ছবি প্রকাশ করে তিনি পেছন থেকে আঘাত না করে সরাসরি আঘাত করার আহ্বান জানান।
 
পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো -
 
“একটু বোঝার চেষ্টা করছি, আর কত দিক থেকে আক্রমণ হতে পারে।

প্রথম আক্রমণের কথা হয়তো সবাই ভুলে গেছে, তাই মনে করিয়ে দিচ্ছি। প্রথম ঝামেলা করল তারা মাওলানা মামুনুলকে নিয়ে। তাকে যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা দিল, তখন ওয়াজ করার জন্য তাকে নড়াইলে আনা হলো। কথা হলো, যখন ওয়াজ মাহফিল হয়, সেটার পারমিশন দিয়ে থাকেন ডিসি, নিরাপত্তার ব্যাপার দেখেন এসপি। এখানে এমপিদের কোনো কাজই নাই। কিন্তু ডিসি বা এসপি থেকে আমাকে বিন্দুমাত্র না জানিয়ে ওয়াজ মাহফিল দেওয়া হলো নোয়াগ্রামে, যেখানে আমার শশুর বাড়ি। তাকে আগেই বলা হলো যে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি নেওয়া আছে, আপনি চলে আসেন। অথচ কালনা ঘাট পর্যন্ত আনার পর তবেই কেবল ডিসিকে জানাল, এসপিকে জানাল। ঘাট থেকে যখন তাকে বলা হলো যে, 'আপনার চিঠি কোথায়?' সে দিতে পারল না। মাহফিল কর্তৃপক্ষ তখন আমাকে ফোন করে বলল, 'আপনি সমস্যা ঠিক করেন। ' কথা হলো, তখন এই সমস্যার সমাধান করা কিভাবে সম্ভব? এটা তো পুরোটাই একটা প্রক্রিয়া, যা আরও সাত দিন আগে থেকে করতে হয়!

তখন ওই লোকগুলো বলা শুরু করে দিল, আমি নাকি ওয়াজ মাহফিল হতে দিচ্ছি না। পুরো খেলাটা খেলেছে এমন ভাবে, তাকে আমার শশুরবাড়ি এলাকায় এনে সরকারের কাছে প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, আমি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মানছি না। আর যদি না আসতে পারে, তাহলে প্রচার করা হবে যে, মাশরাফি ওয়াজ করতে দেয় না। দুই দিক থেকেই তাদের জয়। আর দুই পক্ষের কাছেই আমাকে খারাপ বানাবে।

তবে যাই হোক, আল্লাহ মালিক, সত্য আর চাপা থাকে নি। সবাই কম-বেশি জেনেছে সত্যিটা, আর যারা জানে না,তারা ভুল বুঝেই আছে।

এবার উল্টো খেলা খেলল তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বি মানুষদের উপর আক্রমণ করে তাদেরকে বিপদে ফেলা, পাশাপাশি আমাকেও বিপদে ঠেলে দেওয়া।

এমনকি, কিছুদিন আগে কালিয়ার মির্জাপুরে সম্মানিত একজন শিক্ষককে অপমানের ঘটনায়ও আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে, অথচ ওটা আমার আসনের ভেতর নয়।

যাক, আপনারা সব তো করলেন। এবার আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ, পেছন থেকে আঘাত করতে করতে আপনারা ক্লান্ত হয়ে যাবেন। তো আসুন, সামনে থেকে আঘাত করুন। আমার সঙ্গে সরাসরি লড়াই করুন। আমি সাধুবাদ জানাব।

কিন্তু আমাকে ভোগানোর জন্য দয়া করে সাধারন ও অসহায় মানুষের আর ক্ষতি করবেন না। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, লড়াই আমার সঙ্গে করুন।

আমি জানি, নড়াইলে রাজনীতি যাদের কাছে পেশা, তাদের কাছে আমি এখন নেশা...”

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২২
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।