ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

কচুয়ায় আ.লীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ২০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২২
কচুয়ায় আ.লীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ২০

চাঁদপুর: চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও দোকানপাট ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই বিশ্বরোড এলাকায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে চলে সংঘর্ষ।

আসন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে শাহজাহান শিশির ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট হেলাল, কচুয়া পৌরসভার মেয়র নাজমুল আলম স্বপনসহ অন্যান্য প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রে করে পাল্টাপাল্টি মিছিল, শোডাউন, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও দোকানপাট ভাংচুরের ঘটনা ঘটান। এক পর্যায়ে এটি সংঘর্ষে রূপ নেয়।

মহড়া ও সংঘর্ষ চলাকালীন বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের হাতে লাঠি সোটা দেখা যায়। তাদের এ তাণ্ডবে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

সংঘর্ষে কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার ও কনস্টাবল রাসেল এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেনে। এদের মধ্যে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য কার্তিক রায় ও ছাত্রলীগ নেতা সজিব হোসেনকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাত হোসেন ও নাজমুল, যুবলীগ নেতা মানিক ও নাসিমকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন সবুজ, আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম, তোফায়েল, কাউছার, সাগরসহ অন্যরা স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হন।

সংঘর্ষের মাঝে কচুয়ার বিশ্বরোডে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইব্রাহীম খলিল বাদলের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নিউ সৌদিয়া হোটেলে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এছাড়া কচুয়া মডার্ন হাসপাতাল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব আলমের অফিস, সিপনের সেলুন, নজরুলের ভাই ভাই প্লাস্টিক হাউজ ও সুধিরের মুদি দোকান ভাংচুর করা হয়।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়, কচুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন, সিনিয়র এএসপি সার্কেল (কচুয়া) আবুল কালাম চৌধুরী ও কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা করেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট হেলাল বাংলানিউজকে বলেন, আমার কোনো লোকজন এ ধরণের সোডাউন ও সংঘর্ষে ছিল না। তাই আমাদের মধ্যে কেউ আহত হয়নি।

কচুয়া পৌরসভার মেয়র নাজমুল আলম স্বপন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বর্ধিত সভা খুবই সু-শৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে আগে সড়কে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এখানে বাইরের কেউ আসেনি। সবই আমাদের দলের লোক।

নিনি আরও বলেন, সকালে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের অফিস ভাংচুর করার পর থেকে সংঘর্ষ আরও বাড়তে থাকে। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায় বাংলানিউজকে বলেন, সকালে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আমাদের একজন পুলিশ সদস্য গলায় ইটের আঘাত লেগে আহত হন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম। উপস্থিত সবাইকে বুঝিয়ে শান্ত করা হয়েছে। এখন আর কোনো ধরনের উত্তেজনা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।