ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন।
সোমবার (১৫ আগস্ট) দিবসটি উপলক্ষে দূতালয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হয়।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাইকমিশনার ও হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত-এর লক্ষে দূতালয় প্রাঙ্গণে পবিত্র কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ১৫ জন হাফেজ কোরআনখানীতে অংশগ্রহণ করেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে স্মরণ সভার সূচনা হয়। এরপরে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। আলোচনা পর্বে বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান, জীবন ও কর্মের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরেন। তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শোক প্রকাশ করেন।
হাইকমিশনার রুহুল আলম সিদ্দিকী তার বক্তব্যে শোকাবহ এদিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সব সদস্যদের আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধে সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও অর্থনীতিতে পশ্চাৎপদ বাংলাদেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করে মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করে দেশকে একটি দারিদ্র্য মুক্ত, শোষণ-বঞ্চনাহীন ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণের কাজ শুরু করেন। তিনি বৈরী বৈশ্বিক পরিবেশে, এ স্বল্প সময়ে ১১৬টি দেশের স্বীকৃতিসহ জাতিসংঘে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন ও ইসলামী সম্মেলন সংস্থার সদস্যপদ লাভ করেন।
হাইকমিশনার আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত স্বাধীনতা বিরাধী মহলের ষড়যন্ত্রে কতিপয় বিপথগামী কুচক্রী বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশের অগ্রগতিকে রুদ্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের এ চক্রান্ত বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে সাময়িকভাবে থামিয়ে দিলেও চিরতরে রুদ্ধ করে দিতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল এবং পরবর্তীতে ২০০৯ থেকে ধারাবাহিকভাবে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজে করে যাচ্ছেন।
সবশেষে জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক ‘মুজিব আমার পিতা’ শিরোনামে একটি প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২২
টিআর/আরআইএস