ঢাকা, সোমবার, ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কীটনাশক পান: স্ত্রীর পর মারা গেলেন স্বামীও

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
কীটনাশক পান: স্ত্রীর পর মারা গেলেন স্বামীও

নাটোর: মানসিক চাপ থেকে নিজেদের বাঁচাতে নাটোরের বড়াইগ্রামে গ্যাস ট্যাবলেট (কীটনাশক) পান করে স্ত্রী বিথী বেগমের (২৬) মৃত্যুর পর এবার স্বামী ফারুক হোসেনও (৩৫) মারা গেলেন।

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দিনগত রাত ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এর আগে দুপুরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে স্ত্রী বিথীর মৃত্যু হয়। স্ত্রীর মৃত্যুর ১০ ঘণ্টা পর স্বামীও মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন।

ফারুক হোসেন উপজেলার বনপাড়া কালিকাপুর মহল্লার ফল ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিনের ছেলে এবং বিথী তার ছেলের স্ত্রী।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি জানান, মানসিক চাপ থেকে নিজেদের বাঁচাতে আত্মহননের পথ বেছে নেন ফারুক হোসেন ও বিথী বেগম নামে ওই দম্পতি। একপর্যায়ে শুক্রবার সকালে স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে গ্যাস ট্যাবলেট (কীটনাশক) পান করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রাণ হারান বীথি এবং স্বামী ফারুককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তারও মৃত্যু হয়।

ওসি বলেন, ফারুকের দুটি সংসার ছিল। তিনি তার ছোট স্ত্রীকে নিয়ে বনপাড়া পৌরসভার হালদার পাড়া এলাকায় আলাদাভাবে ভাড়া বাসায় থাকতেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঋণ ও সুদের চাপে মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তারা। মাঝে মধ্যেই সংসারে অশান্তি লেগে থাকতো।

এ অবস্থা থেকে বাঁচতে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে ভাড়া বাসায় তারা দু’জনই একসঙ্গে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে বাবার বাড়ি কালিকাপুর যান। সেখানে গিয়ে তারা মাটিতে লুঠিয়ে পড়লে ফারুক হোসেনের পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান।

সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষণিক তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। দুপুরের দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিথীর মৃত্যু হয়। আর আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বামী ফারুক হোসেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও মারা গেলেন।  

তিনি বলেন, ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে গত ৪ আগস্ট ঋণের বোঝা সহ্য করতে না পেরে নিজ গলা কেটে আত্মহত্যা করেন উপজেলার বনপাড়া পৌর শহরের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী শরীফুল ইসলাম সোহেল (৩৪)।  

সম্প্রতি বনপাড়া পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র সমবায় সমিতি গড়ে তুলে সুদের রমরমা ব্যবসা শুরু করেছে অসাধু ব্যক্তি ও কতিপয় প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে তথা সুদী কারবারীদের দৌরাত্ম্যও চোখে পড়ার মতো।  

স্থানীয়দের দাবি, অতি দ্রুত এসব সুদের প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ ও সুদী কারবারীদের দৌরাত্ম্য প্রতিহত না করলে অকালে নিঃস্ব হবে সহস্র পরিবার। পাশাপাশি এ রকম আত্মহত্যার মতো ঘটনা আরও ঘটবে বলে আশঙ্কা করছে অভিজ্ঞ মহল।  

** ‘কীটনাশক’ পানে দম্পতির আত্মহত্যার চেষ্টা, স্ত্রীর মৃত্যু

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।