ঢাকা, শুক্রবার, ২২ ভাদ্র ১৪৩১, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১৬ বছর পর ধরা পড়লো তিন ব্যবসায়ীর হত্যাকারী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
১৬ বছর পর ধরা পড়লো তিন ব্যবসায়ীর হত্যাকারী

কুমিল্লা: ২০০৭ সালের ৬ জানুয়ারি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার শ্রীয়াং বাজারে ১ হাজার ৪০০ টাকা ডাকাতি করার জন্য তিন ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটে। প্রায় ১৬ বছর পর এই হত্যাকাণ্ডে দণ্ডপ্রাপ্ত এক পলাতক আসামিকে আটক করেছে র‍্যাব।

 

রোববার (২৮ আগস্ট) রাতে র‌্যাব-১১ সিপিসি-২ জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচর এলাকা থেকে ওই আসামিকে আটক করা হয়।  

সোমবার (২৯ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান, র‌্যাব-১১ কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।

আটক আসামি উপজেলার শ্রীয়াং দক্ষিণ পাড়া এলাকার মো. সেলিম রেজার ছেলে মো. নেওয়াজ শরীফ রাসেল ওরফে সবুজ ওরফে বাবু (৩৭)।  

র‍্যাব জানায়, আজ থেকে কয়েক বছর আগে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায়শই রাস্তায় সাধারণ মানুষ ডাকাতের কবলে পড়ত। এতে সাধারণ মানুষের জান ও মালের বেশ ক্ষয়-ক্ষতি হত। প্রায় ১৬ বছর আগে ২০০৭ সালের ৬ জানুয়ারি শনিবার প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও ঘন কুয়াশার একটি রাতে আসামি শরীফ রাসেলসহ আরও কয়েকজন শ্রীয়াং এলাকার বদির পুকুরপাড় সংলগ্ন একটি জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল। এমন সময় লাকসাম উপজেলার শ্রীয়াং বাজারের দোকান বন্ধ করে কাঁচামাল ব্যবসায়ী মনোহরগঞ্জ উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের মনিন্দ দেবনাথের ছেলে উত্তম দেবনাথ ও পরীক্ষিত দেবনাথ এবং পান ব্যবসায়ী লাকসাম উপজেলার জগৎপুর গ্রামের সামছুল হকের ছেলে বাচ্চু মিয়া বাড়ি ফিরছিলেন। তারা বদির পুকুর পাড় এলাকায় এসে পৌঁছালে আকস্মিকভাবে জঙ্গল থেকে আসামি রাসেল ও তার সহযোগীরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে এবং যার যা কিছু আছে সব কিছু দিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দ্বারা ভয়ভীতি দেখায়। তারা টাকা-পয়সা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামি রাসেল ও তার সহযোগীরা তাদের অনবরত কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা আসামিদের দিয়ে দেয়। হঠাৎ উত্তম দেবনাথ আসামি রাসেল ও তার সহযোগীদের চিনতে পেরেছে এবং পরের দিন স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছে তাদের বিরুদ্ধে নালিশ করবে বলে চিৎকার করে ওঠে। যেহেতু ব্যবসায়ীরা আসামিদের চিনে ফেলেছে তাই রাসেল ও তার সহযোগীরা তাদের হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়।

পরবর্তীতে আসামিরা ব্যবসায়ীদের পাশের একটি মাঠে নিয়ে চাপাতি ও ছোরা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় ভিকটিম বাচ্চু মিয়ার ভাই কবির হোসেন ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানায় খুনসহ ডাকাতির একটি মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনার ১১ বছর পর ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর কুমিল্লার তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক নুর নাহার বেগম শিউলী হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ৫ জন আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন-লাকসাম শ্রীয়াং এলাকার সেলিম রেজার ছেলে তিন ব্যবসায়ী হত্যার মামলার আসামি মো. রাসেল, আব্দুল কাদেরের ছেলে আব্দুর রহমান, ইয়াকুব আলীর ছেলে শহীদুল্লাহ, আব্দুল মান্নানের ছেলে ফারুক হোসেন ও মোহাম্মদ উল্লাহর ছেলে স্বপন। দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামির মধ্যে আব্দুর রহমান, শহীদুল্লাহ, ফারুক হোসেন বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। অপর আসামি স্বপন পলাতক রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।