ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, পাথর ও বালু ক্রয়-বিক্রয় শুরু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২২
ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, পাথর ও বালু ক্রয়-বিক্রয় শুরু

পঞ্চগড়: হঠাৎ দুই শ্রমিক ইউনিয়ন লোড-আনলোড করার খরচ বাড়ানোয় পঞ্চগড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর ও বালু ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করে দেয় পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশন। তিনদিন পর আলোচনায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে যৌথ ফেডারেশন।

 

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকাল থেকে পাথর ও বালু ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম আগের মতো শুরু হবে বলে জানানো হয়।

সোমবার (২৯ আগস্ট) দিনগত রাতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যবসায়ী ও শ্রমিক নেতাদের যৌথ আলোচনায় বিষয়টি সমাধান হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

এসময় পঞ্চগড় জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী মণ্ডল, পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশন সভাপতি হাসিবুল হক প্রধান, সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, শ্রমিক ইউনিয়ন ২৬৪ এর সভাপতি আব্দুল লতিফ, সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী, শ্রমিক ইউনিয়ন ২০০০ এর সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন, পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালু ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারী সমিতির দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রউফসহ পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, এর আগে ট্রাকে পাথর ও বালু ওঠানো ও নামানোয় শ্রমিকদের প্রতি সেফটি ২ টাকা ৮০ পয়সা করে দেওয়া হত। কোনো যৌক্তিক কারণ ও আলোচনা ছাড়াই সেই পারিশ্রমিক ৫ টাকা ৫০ পয়সা দাবি করে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের হঠাৎই এমন বাড়তি পারিশ্রমিক দাবির কারণে পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশন গত ২৭ আগস্ট থেকে পঞ্চগড়ে পাথর- বালু ক্রয় ও বিক্রয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখে। এদিকে প্রায় তিন দিন ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ থাকার পর উভয় পক্ষের আলোচনা শেষে সমাধানের মাধ্যমে ধর্ষঘট প্রত্যাহার করে ব্যবসায়ীরা।

পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশন সূত্রে জানা যায়, নতুন সিদ্ধান্তে প্রতি সেফটি পাথর ২ টাকা ৮০ পয়সার পরিবর্তে ৩ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এদিকে বালু ১০ চাকা ট্রাকে ১৭০০ টাকার পরিবর্তে ১৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ৬ চাকা ট্রাকে ৮০০ টাকার পরিবর্তে ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জেলা পাথর-বালু ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারী সমিতির দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রউফ বাংলানিউজকে বলেন, হঠাৎ করে পাথর ও বালু লোডিং খরচ কোনো আলোচনা ছাড়াই শ্রমিক নেতারা বৃদ্ধি করলে এর প্রতিবাদে গত শনিবার থেকে পাথর ও বালু ক্রয়-বিক্রয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন জেলার ব্যবসায়ীরা। প্রায় তিনদিন পর উভয় পক্ষের যৌথ আলোচনা ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়েছে। এখন থেকে পাথর লোডিং খরচ প্রতি সেফতি ৩ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। ছয় চাকার ট্রাক বালু লোড ৯০০ এবং ১০ চাকার ট্রাক বালু লোড ১৮০০ টাকা দর নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে যথারীতি আগের মতো কার্যক্রম শুরু হবে।

শ্রমিক সংগঠন ২৬৪-এর সভাপতি আব্দুল লতিফ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দাবি ছিল ৫ টাকা ৫০ পয়সা। আমরা শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৪টাকা করে নেওয়া শুরু করি। এর পর ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদে কার্যক্রম বন্ধ করে রাখে। এখন উভয় পক্ষের আলোচনায় বিষয়টি সমাধান হয়ে ৩ টাকা ৯০ পয়সায় এসেছে। আমাদের যে দাবি ছিল সেটা পূর্ণ হয়েছে।

এদিকে পঞ্চগড় জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বাংলানিউজকে বলেন, পাথর বালু যৌথ ফেডারেশন ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাসহ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। এবং তারা সবাই এ সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করায় পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশন তাদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়।

এর আগে সোমবার সকালে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক পাথর ও বালু ব্যবসায়ী এবং শ্রমিক অসন্তুষ্টি সমাধানে জেলা পরিষদের প্রশাসককে প্রধান করে তিন সদস্য কমিটি গঠন করলে একই দিন রাতে সমস্যার সমাধান ঘটে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।