ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শুধু অভিযান নয়, অপরাধ নির্মূলে মানবিক সহায়তা করছে র‌্যাব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২
শুধু অভিযান নয়, অপরাধ নির্মূলে মানবিক সহায়তা করছে র‌্যাব

ঢাকা: র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূলে শুধু অভিযানেই সীমাবদ্ধ না থেকে কার্যকরী পন্থায় বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। যাতে অপরাধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যায়।

 

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কক্সবাজারের লং বিচ হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অপরাধ প্রবণতা ঠেকাতে ঝুঁকিতে থাকা ৩৬ জন তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সমাপনী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন।

‘অপরাধকে না বলুন’ স্লোগানকে সামনে রেখে ‘নবজাগরণ’ শীর্ষক র‌্যাবের এ কর্মসূচির আওতায় পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপরাধ ঝুঁকিতে থাকা লোকদের চিহ্নিত করে সুন্দর, স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য উৎসাহিত করা হবে।

র‌্যাব ডিজি বলেন, কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ এর ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে ৩৬ জন প্রশিক্ষণার্থীকে সেলাই, ড্রাইভিং, টুরিস্ট গাইড, ফটোগ্রাফি, রেস্টুরেন্ট সার্ভিস ও সার্ফিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ চলাকালীন প্রশিক্ষণার্থীদের আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে অনেককে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।

তাদের কর্মসংস্থানের বিভিন্ন উপকরণও দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আশা করি, এখানে যারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন তারা নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে ভবিষ্যতে বিভিন্ন সামাজিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে নিজে বিরত থাকবেন এবং অন্যান্যদেরও বিরত রাখবেন। যারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তারা সে পথ থেকে ফিরে এসে আপনাদের দেখে স্বাবলম্বী হতে উৎসাহ পাবেন।

অপরাধমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ হাতে নিয়েছিল র‍্যাব। অপরাধপ্রবণ লোকদের চিহ্নিত করে নবজাগরণ কর্মসূচির আওতায় সুন্দর জীবন গঠনের পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে অপরাধে জড়াতে নিরুৎসাহিত করা। আর এটা কার্যকর করে সমাজে অপরাধ প্রবণতা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

নবজাগরণের মাধ্যমে সামাজিক, পারিবারিক ও মনস্তাত্ত্বিক অন্তরায় সৃষ্টি করে এলাকাভিত্তিক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যেন সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অপরাধে না জড়ানোর ব্যাপারে সচেতন থাকে।

শুধুমাত্র গ্রেফতারের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ নির্মূল নয় বরং আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া ও পুনর্বাসনের মাধ্যমে পথভ্রষ্ট জঙ্গিদের সাধারণ জীবনে ফিরে আসতে সহায়তা করছে র‍্যাব।

র‌্যাব ডিজি বলেন, ইতোমধ্যে ‘নবদিগন্তের পথে’ শীর্ষক র‍্যাবের ডি-রেডিক্যালাইজেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে ১৬ জন বিপথগামী জঙ্গি আত্মসমর্পণ করে সাধারণ জীবনে ফিরে এসেছে। ‘চলো যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে’-এ সামাজিক যুদ্ধের স্লোগানকে সামনে রেখে র‍্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে প্রতিনিয়ত মাদকবিক্রেতাদের গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের হাতে সোপর্দ করা হচ্ছে।

র‍্যাবের অভিযানে সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে র‍্যাব প্রধান বলেন, র‍্যাবের অন্যতম একটি সফলতা সুন্দরবন দস্যু মুক্ত করা। যেখানে আত্মসমর্পণ করে ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ জন জলদস্যু। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে প্রত্যেককে নগদ আর্থিক সহায়তা, র‍্যাবের পক্ষ থেকে আর্থিক, বর্ষপূর্তিতে সহায়তা ও বিভিন্ন উৎসবে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

র‍্যাব যেভাবে পূর্ববর্তী সময়ে অপরাধ দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে এসেছে তেমনিভাবে ভবিষ্যতেও সেই ধারা অব্যাহত রেখে অপরাধ প্রবণতা প্রতিরোধের লক্ষে সমগ্র দেশব্যাপী আরও অধিকতর কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। বর্তমানে র‍্যাব জল, স্থল ও আকাশে অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা সম্পন্ন একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।

দেশকে অশান্তকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক বলেন, বিভিন্ন সময়ে কিছু অপরাধীমহল দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে আমরা সেই সমস্ত ব্যক্তিদেরও খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২
পিএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।