ঢাকা, সোমবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

রাতেই নামছেন জেলেরা, কাল থেকে পাওয়া যাবে ইলিশ

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
রাতেই নামছেন জেলেরা, কাল থেকে পাওয়া যাবে ইলিশ

ফেনী: তপ্ত রোদের দুপুর গড়িয়ে নেমেছে স্নিগ্ধ বিকেল। সোনাগাজীর চরচান্দিয়া জেলে পাড়ার আজকের বিকেলটি অন্যদিনের বিকেলগুলোর মতো নয়।

অলসতা ভেঙে আড়মোড়া দিয়ে উঠেছেন জেলেরা। পাড়ার শেষ প্রান্তের চা দোকানটি থেকে শুরু করে প্রতি ঘরে ঘরেই উৎসবের আমেজ। সবার চোখ-মুখেই উচ্ছ্বাসের আভা। ইলিশ ধরতে দরিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি ঘরে ঘরে।  

ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও গত ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের জন্য ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময়করণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ। আজ রাত ১২টার পর থেকেই নদীতে নামবে জেলেরা। ধরবে ইলিশ।  

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) জেলে পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার শেষ সময়ে সব প্রস্তুতি সারিয়ে নিচ্ছেন তারা। অনেকেই প্রস্তুতি শেষে মুখিয়ে আছেন নদীতে নামতে। নৌকা মেরামত, নতুন জাল তৈরি ও ছেঁড়া জাল মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কেউ কেউ। নদীতে নামতে জেলেরা তাদের মাছ ধরার নৌকাগুলো সারি সারি নোঙর করে রেখেছেন।  

সুজন নামে এক জেলে বলেন, আমরা সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা মেনে এতদিন নদীতে নামিনি। আজ রাত থেকে আবার নামবো।  

তিনি জানান, মাছ ধরেই তার সংসার চলে। নিষিদ্ধ সময়ে সরকার কিছু চাল দেয়, তা দিয়ে কিছুই হয় না। বহু কষ্টে সময়টা পার করতে হয়।  

বয়সে তরুণ হরিপদ নামে এক জেলে জানান, ঋণ-দাদনে এক গলা হয়ে আছে। দরিয়ায় নামলে জালে ইলিশ এলে সেই বোঝা কিছুটা কমবে।  

আরও বেশ কয়েকজন জেলে জানান, এ সময়টার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন তারা। নদীতে নামতে পারলে এবং জালে মাছ এলে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাগব হবে।  

স্থানীয় মৎস্যজীবী ও মহাজন চুট্টু মহাজন বলেন, এখানকার জেলেরা সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞায় মাছ শিকার থেকে বিরত থাকে। সরকার জেলেদের নিষেধাজ্ঞাকালীন প্রকৃত জেলে চিহ্নিত করে প্রণোদনা দেওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। তবে প্রয়োজনের তুলনায় প্রণোদনা অপ্রতুল। আগামীতে প্রণোদনা বাড়ানোসহ প্রণোদনা বঞ্চিত বেহন্দি জালের জেলেদেরও সম্পৃক্ত করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

সোনাগাজী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুর্য সাহা বলেন, ইলিশের এ প্রধান প্রজনন মৌসুমের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করা গেলে এ বছর ফেনী নদীতে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তাই জেলেদের নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ শিকার থেকে বিরত রাখতে এখানকার ২৫০ জন জেলেকে প্রণোদনা হিসেবে জনপ্রতি ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। উপজেলায় নিবন্ধিত প্রায় ১ হাজার ৯৯৭ জন জেলে থেকে আমরা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত ইলিশ আহরণ করা জেলেদের মধ্যেই এ প্রণোদনা বিতরণ করেছি।  

তিনি আরও বলেন, জেলেদের মধ্যে আইন মানার প্রবণতা বেড়েছে। অনেকেই এখন নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ ধরতে যায় না। এটা ইলিশ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ইতিবাচক।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
এসএইচডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।