ঢাকা: সারা দেশে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহন ধর্মঘট নিয়ে মুখ খুলেছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। ধর্মঘটের প্রতিবাদ জানিয়ে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা জানান, তারা এই ধর্মঘটের পক্ষে নেই।
দুই সংগঠনের নেতারা জানান, মূলত বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জোরপূর্বক পরিবহন বন্ধ রাখছেন, যাতে সমাবেশে বিএনপির লোকজন কম আসে। সরকারের ইন্ধনে এই ধর্মঘটে তাদের লোকসান হচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে তাদেরও রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকরাও আছেন কষ্টে।
এক শ্রমিক নেতা জানান, তাদের ফেডারেশনে ‘দল যার যার, পরিবহন মালিক এক কাতার’ স্লোগান রয়েছে। তাই ইচ্ছা করলেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত পরিবহন মালিকরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। শুধু সরকারের বাধার কারণে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে। এর সঙ্গে মালিক কিংবা শ্রমিকদের কোনো সম্পর্ক নেই।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, এ ধর্মঘট মালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে নয়। সরকার জোর করে মালিকদের নামে এটা করাচ্ছে। গণবিরোধী সরকার চক্রান্তমূলকভাবে গণপরিবহনের মালিকদের জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে। সরকার গণপরিবহন মালিকদের ভাবমর্যাদা যেমন ক্ষুণ্ন করছে, তেমনি মালিকদের বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান বলেন, সারা দেশে বিএনপির কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার জন্যই সরকার পরিবহন ধর্মঘট দিতে বাধ্য করছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতারা চাপ দিয়ে এটা করাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে এর প্রতিবাদ হচ্ছে। কিন্তু সরকারের কারণে তারা এটা এড়াতে পারছেন না। তাদের সভাপতি মো. শাজাহান খান যিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী। সম্প্রতি তিনিও বলেছেন, এই ধর্মঘটের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশের দুদিন আগে গণপরিবহনের ধর্মঘট ডাকা হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খুলনা বিভাগীয় বাস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল গাফফার বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের মুষ্টিমেয় পরিবহন মালিকের ইন্ধনে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এই অঘোষিত ধর্মঘটের সঙ্গে মালিক কিংবা শ্রমিক সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
একইভাবে বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতি ৪ ও ৫ নভেম্বর ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এই ধর্মঘটের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ না করে তিনি জানান, আমাদের অজান্তে ও আলোচনা ছাড়াই এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
এমএইচ/এমজে